টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: কয়েক শতাব্দী ধরে, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো মুসলমানদের উপর তাদের হামলা ও আগ্রাসনের ন্যায্যতা ও বৈধতা প্রমাণের জন্য ইসলাম ধর্মকে একটি সহিংস ধর্ম হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে আসছে।মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ক্রুসেড যুদ্ধ থেকে শুরু করে অটোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত পাশ্চাত্যের আগ্রাসনের ঘটনাবলী এবং এখন গাজায় যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে তার পেছনে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর যুক্তি হচ্ছে তারা মনে করে ইসলাম পশ্চিমা সভ্যতার জন্য হুমকি।
এই চিন্তার কারণেই দখলদার ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট ‘আইজ্যাক হারজগ’ ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি সাক্ষাতকারে গাজায় হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ নয়, বরং এটি পশ্চিম সভ্যতা টিকিয়ে রাখার যুদ্ধ।’
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরাইলের প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্য এমন এক নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে যায় যা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয় এবং যা একটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা উপেক্ষা করার শামিল।
এটা এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি যা আমেরিকা, ইউরোপ ও ইসরাইলের সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনকে আরো জোরদার করবে এবং ফিলিস্তিনিদেরকে নিজ মাতৃভূমি থকে সমূলে উৎখাত করে তাদের জীবনকে আরো দুর্বিসহ করে তুলবে।
এই দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে, পশ্চিমের কণ্ঠস্বর ছাড়া আর অন্য কারো বক্তব্য শোনার অধিকার কারো থাকবে না। অর্থাৎ ফিলিস্তিন ইস্যুতে কেবল পশ্চিমারাই তাদের ইচ্ছেমতো কথাবার্তা বলবে, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেবে এবং তারা যা বলবে তাই সকলকে বিশ্বাস করতে হবে।
গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর পূর্ণ সমর্থনে, ইসরাইল গাজা উপত্যকা এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে ব্যাপক হামলা শুরু করে।
সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় এ পর্যন্ত ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ৭৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির সহায়তায় জমি দখল ও হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করা হয় এবং ১৯৪৮ সালে এর অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকে ইসরাইল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব পাকাপোক্ত করতে ফিলিস্তিনিদের সমস্ত ভূমি দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র: পার্সটুডে।