topআন্তর্জাতিক

হামাসকে কখনোই নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: ইরান

টাইমস ২৪ ডটনেট: ইসরায়েলের সাথে ২০১৪ সালের যুদ্ধের বার্ষিকী উপলক্ষে মধ্য গাজা উপত্যকার সীমান্তের কাছে সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছেন এক হামাস যোদ্ধা। ছবিটি চলতি বছরের ১৯ জুলাই তোলা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু হামাসকে কি আসলেই সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব? প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টে আগেই বলা হয়েছে, ২ মাস ধরে হামলা চালানোর পরও হামাসকে নির্মূলের ধারেকাছে নেই ইসরায়েল। আর এবার একই কথা বলল ইরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, হামাসকে কখনোই নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র কখনোই হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম হবে না এবং ইসরায়েল কেবলমাত্র সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে গাজায় আটক বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে পারে। জেনেভায় জাতিসংঘে দেওয়া এক বক্তৃতায় হামাসকে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হিসেবে বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন: ‘ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র কখনোই হামাসকে নির্মূল করতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেন, তেহরান-সমর্থিত হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল। কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমেই হামাসের হাতে আটক বন্দিদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
রয়টার্স বলছে, মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বক্তৃতার সময় এসব কথা বলেন হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। বৈঠকের পরে ইরানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সকল মন্ত্রীই একমত যে, ইসরায়েলের চলমান হামলা এবং তারা যে গণহত্যা করে চলেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংটি উন্মুক্ত থাকতে হবে, গাজার প্রতিটি অংশে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে হবে এবং গাজার জনগণের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি বন্ধ করতে হবে।’
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কাছে অন্ততপক্ষে ‘সীমিত সময়ের জন্য’ সম্পর্ক ছিন্ন করার আবেদন করেছিলেন।
এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইসলামিক তেল ও খাদ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য হামাসকে ইসরায়েল নির্মূল করতে পারবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছে। সম্প্রতি প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট বলা হয়েছে, ২ মাস ধরে হামলা চালানোর পরও হামাসকে নির্মূলের ধারেকাছে নেই ইসরায়েল।
গত ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৬ দিন যুদ্ধের পরও হামাসকে নির্মূলের ধারে-কাছেও যেতে পারেনি ইসরায়েলি সেনারা। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডসের ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছেন। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত যুদ্ধে ৫ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামাসকে ইসরায়েল কিভাবে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে তা নিয়েও ইতোমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে জর্ডান। গত নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, হামাসকে ইসরায়েল কিভাবে নিশ্চিহ্ন করবে; সেটি তারা বুঝতে পারছেন না।
সেসময় তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল বলছে তারা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে যায়। এখানে অনেক সামরিক ব্যক্তিবর্গ আছেন। আমি বুঝতে পারি না এ লক্ষ্য কিভাবে অর্জিত হবে।’ অবশ্য হামাসকে নির্মূল করতে না পারলেও; গাজার সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত গাজায় ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই হলেন নারী ও শিশু।

 

Related Articles

Back to top button