টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে ছদ্মবেশে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে কিছু রোহিঙ্গা দুষ্কৃতি। কক্সবাজার জেলায় আশ্রিত এই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ন খুন-খারাপি চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে ফের ‘আধিপত্য বিস্তারকে’ কেন্দ্র করে মায়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গুলিযুদ্ধে ৪ জন নিহত হয়েছে। জখম হয়েছে আরও পাঁচজন। প্রায়দিনই সেখানে গুলি কাণ্ড ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উখিয়া ১৭ নম্বর মধুরছড়া এবং জামতলি ১৫ নম্বর ক্যাম্পে এ গুলিযুদ্ধ ঘটে। মায়ানমারে থাকতেও লিপ্ত ছিল নানা অপকর্মে। এই দুষ্কৃতিরা এখন শরনার্থীশিবিরের তরুণী-যুবতীদের দেহব্যবসার পাশাপাশি বিদেশে পাচার করে। আছে মাদক কারবারও। মূলতঃ এই নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরে চলছে তাদের খুনোখুনি।
মঙ্গলবার রাতে আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা এবং জি-৩ ব্লক এলাকায় আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গুলিযুদ্ধ ঘটে।নিহত তিনজন হলেন—আশ্রয়শিবিরের এইচ-৭৭ ব্লকের বাসিন্দা আবুল কাসেম (৩৫), জি-৩ ব্লকের বাসিন্দা মো. জোবায়ের (১৬) ও, ইমাম হোসেন (৩১) জয়নাল উদ্দিন (২৭)। গুলিবিদ্ধ কয়েকজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন—একই আশ্রয়শিবিরের জি-৬ ব্লকের আনোয়ার সাদেক (১৭) ও জি-৭ ব্লকের মো. আয়াস (১৮)।
আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক গুলিযুদ্ধ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা সাইফ উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ১২ জন আরসার সদস্য ১৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা থেকে আবুল কাশেমকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। কিছুটা দূরে নেওয়ার পর তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আরএসওর লোকজন রাতে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র পাহারা বসান।আশ্রয় শিবিরের জি-৩ ব্লক এলাকায় আরসার লোকজন আরএসওর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে দুই পক্ষের গুলিযুদ্ধ চলে। গত সাড়ে ৮ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৬১টি সংঘর্ষ ও গুলিযুদ্ধে অন্তত ৭৪ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা), ২২ জন আরসার সদস্য, ৫ জন আরএসওর সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। কয়েকদিন আগে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পের ই/ ৪ ব্লকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এতে রোহিঙ্গা যুবক ছৈয়দ আলমের ঘরে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে দ্রুত সটকে পড়ে। শিবিরের বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ ছৈয়দ আলমকে ক্যাম্পে অবস্থিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরআগে উখিয়া ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সংঘর্ষে মোহাম্মদ ইউনুস নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়। এছাড়া উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কুপিয়ে আতাউল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। এছাড়া ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুন করা হয় মোহাম্মদ ইউনুসকে।
এবার তিনদিনের ব্যবধানে তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটলো। কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পের ই/ ৪ ব্লকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো শামিম হোসেন জানান, এদিন ভোরে ১০/১২ জনের একদল দুষ্কৃতি ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই/৪ ব্লকে অবস্থিত রোহিঙ্গা যুবক ছৈয়দ আলমের ঘরে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে দ্রুত সটকে পড়ে। শিবিরের বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ ছৈয়দ আলমকে ক্যাম্পে অবস্থিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে এপিবিএন পুলিশ ও উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্যাম্পে অভিযান চালায়। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারীক জানান, ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারে। এরআগে সোমবার দুপুরে উখিয়া ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সংঘর্ষে মোহাম্মদ ইউনুস নামের এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়। এ সময় আহত হয়েছে আরও পাঁচজন। এরআগে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কুপিয়ে আতাউল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। এছাড়া ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুন করা হয় মোহাম্মদ ইউনুসকে। সে কুতুপালং ক্যাম্পের ই/১৫ ব্লকের নুর মুহাম্মদের ছেলে।