আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (নাগ) প্রতিরোধে রাষ্ট্র হিসেবে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে মিয়ানমার। জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট মিয়ন্ত সুয়ে বলেছেন, চীনের সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা দমনে অকার্যকর ব্যবস্থাপনা মিয়ানমার ভেঙে যাওয়ার কারণ হতে পারে। রাজধানী নেইপিদোতে এক অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, সীমান্ত অঞ্চলে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে; সরকার যদি তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থহয় বেশ কিছু অঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করবে এবং মিয়ানমার টুকরো টুকরো হয়ে যাবে।
কদিন আগেই মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের কাওলিন জেলা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জান্তাবিরোধীরা। এর আগে চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু শহর দখলে নিয়েছিল তারা। এই শহরে রয়েছে জেলার সামরিক প্রশাসনিক কার্যালয়ের সদর দপ্তর, যার কারণে কৌশলগত দিক থেকে শহরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট মিয়ন্ত সুয়ে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত হবে সতর্কতার সঙ্গে এই ইস্যুটি নিয়ন্ত্রণ করা। মিয়ানমারের অখণ্ডতা বজায় রাখতে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনও জরুরি।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারের জান্তা এখন বেশ কঠিন সময় পার করছে। জান্তাবিরোধী বিভিন্ন দল ও সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী মিয়ানমারের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর–পশ্চিশাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর শত শত ঘাঁটিতে প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ বিরুদ্ধে রাজধানী নেইপিদো ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় শহরে বিক্ষোভ শুরু করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়।
সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী মিলে গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ। জান্তাবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী এই রাজনৈতিক জোট নিজেদের দেশটির ছায়া সরকার বলেও দাবি করে।