topআন্তর্জাতিক

এবার সমুদ্র মিশনে ভারত

টাইমস ২৪ ডটনেট: একের পর এক চমক দেখাচ্ছে ভারত। প্রথমে চাঁদের দেশে, তারপর সূর্যভ্রমণ। এবার সমুদ্র অভিযানে নামছে দেশটির মোদি সরকার। এ লক্ষ্যে গভীর সমুদ্র মিশন উপযোগী সাবমারসিবল বা ডুবোযান তৈরি করছে ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের ভূবিজ্ঞানমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সোমবার মৎস্য-৬০০০ নামের ওই সাবমারসিবলটির ছবি প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার)। ভারত সরকারের ‘সমুদ্রযান’ মিশনের অংশ হিসাবে বানানো হচ্ছে এটি।

মঙ্গলবার এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সাবমারসিবলটির নকশাসহ নির্মাণকাজ করছে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশান টেকনোলজি (এনআইওটি)। একবার সমুদ্রে নামানো হলে এটিই হবে ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী ডুবোযান।

কিরেন রিজিজু তার পোস্টে লেখেন, ‘বতুলাকার (বৃত্তের মতো গোলাকার) এই ডুবোযান ৬০০০ মিটার গভীর পর্যন্ত নামতে পারবে। তবে প্রাথমিকভাবে ডুবোযানটি ৫০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত নামবে।

অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য হলো-দেশের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি, জীবিকার ক্ষেত্রে উন্নতি, কর্মসংস্থান, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা। এটি সাধারণ সময়ে ১২ ঘণ্টা পানির তলায় থাকতে পারবে। তবে বিশেষ অবস্থায় ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারবে।’

রিজিজু তার পোস্টে আরও লেখেন, ‘আমাদের পরবর্তী মিশন সমুদ্রযান। ভারতের প্রথম মনুষ্যবাহী গভীর সমুদ্র মিশনের এই সাবমারসিবলে তিনজন মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। গভীর সমুদ্রের সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য অধ্যয়ন করা হবে এর মাধ্যমে। এই প্রকল্প সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করবে না। এই মিশন গভীর সমুদ্রে খনিজ ও জীববৈচিত্র্য অনুসন্ধান করবে। ট্রায়াল রান শুরু হবে ২০২৪ সালের প্রথম কোয়ার্টারেই।’

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশান টেকনোলজির ডিরেক্টর ড. জিএ রামদাস বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ট্রায়ালের প্রথম পর্বে ৫০০ মিটার নিচ পর্যন্ত নামানো হবে ডুবযানটিকে। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ এই ট্রায়াল শুরু হবে। ২০২৫ সালের শেষদিকে ৬ হাজার মিটার পর্যন্ত ট্রায়াল শুরু হবে।’

অতল সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে ভারতের ‘সমুদ্রযান প্রকল্প’। এই ডিপ ওশান মিশন শুরু করার আগে কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন সমুদ্র গবেষকরা। আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে টাইটান সাবমেরিন।

মুহূর্তের মধ্যে পানির চাপে ধ্বংস হয়ে যায় ডুবযানটি। সে ক্ষেত্রে মৎস্য-৬০০০ সাবমারসিবল কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এর মধ্যে জানা গেছে, এই সমুদ্রযান ওশানগেটের টাইটানের থেকেও অতল গভীরে নামবে। তবে টাইটানের সঙ্গে যা হলো, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না নয় তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হবে মৎস্য-৬০০০ এ।

১০ হাজার মিটার সমুদ্র তলদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাবমারসিবলটিকে ছাড়পত্র দিয়েছে নরওয়ের সার্টিফিকেশন এজেন্সি। ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স এবং চীনের পাশাপাশি এক সারিতে তুলে দেবে এই সমুদ্রযান মিশন। প্রকল্পের মোট খরচ ৬ হাজার কোটি টাকা।

আগামী ৫ বছরের সমুদ্র গবেষণার জন্য ইতোমধ্যেই ৪,০৭৭ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে সরকার।

Related Articles

Back to top button