টাইমস ২৪ ডটনেট: বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। কখনো এত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়নি। প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে মানুষ। সোমবার একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৭৪১ জন। এছাড়া সোমবারই নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৯৬৭ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৯৭৭ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৫১ হাজার ২৭২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৬৮ হাজার ২৬ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৮৩ হাজার ২৪৩ জন ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৮১ জন মারা যান। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
তবে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের বিস্তারে জলবায়ু পরিবর্তনকে আংশিকভাবে দায়ী করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রেকর্ডের সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বের অষ্টম জনবহুল এই দেশটিতে ১ লাখ ৫১ হাজার ২৭২ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের পরে মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে ৭৪১ জনের।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মৌসুমের আগেই এত মৃত্যু এর আগে দেখেনি বাংলাদেশ। আক্রান্তের সংখ্যাও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। অর্থাৎ, চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে। তাদের মতে, আক্রান্তদের বেশির ভাগই শক সিনড্রোমে চলে যাচ্ছে। গত দুই দশকের মধ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছিল ২০১৮ সালে। ওই বছরও শক সিনড্রোমে বেশি মৃত্যু হয়েছিল। তবে এবার কেন রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম বেশি দেখা যাচ্ছে জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। আরেকটি আশঙ্কার কথা হলো, এতদিন ভাইরাসটির প্রজনন ও বিস্তার ছিল ঢাকা মহানগরকেন্দ্রিক। কিন্তু এবার ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় দ্রুত সংক্রমণ ঘটছে।