আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের জিনজিয়ান প্রদেশে উৎপাদিত ‘নিষিদ্ধ’ তুলার গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির কাস্টমস ও সীমান্ত নিরাপত্তা সংস্থা তৈরি পোশাক ও জুতার ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ তথ্য বের করেছে বলে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।চীনের জিনজিয়ানে উৎপাদিত তুলার পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি বা রপ্তানি নিষিদ্ধ। ওয়াশিংটনের দাবি, জিনজিয়ানে শ্রমিকদের ‘শোষণ’ করে এসব তুলা উৎপাদন করা হয়। রয়টার্স জানিয়েছে, এবারই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রে জিনজিয়ানের তুলার পণ্য পাওয়ার তথ্য সামনে এসেছে। দুই বছর আগে ২০২১ সালে আইন করে যুক্তরাষ্ট্রে জিনজিয়ানের তুলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, এ আইনটি কার্যকরে কাস্টমস কর্মকর্তারা পণ্যগুলোর আইসোটোপিক পরীক্ষা করেছেন। বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, এরমাধ্যমে কোন অঞ্চলে তুলা উৎপন্ন করা হয়েছে সেটি খুঁজে বের করা সম্ভব।গত মে মাসে ৩৭টি তৈরি পোশাকের ১০টিতে জিনজিয়ানের তুলার অস্তিত্ব পেয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। তারা তিন ধাপে— ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল এবং ২০২৩ সালের ২৩ মে যাওয়া তিনটি ব্যাচ থেকে এসব স্যাম্পল সংগ্রহ করেন।তিনটি ব্যাচ থেকে সংগ্রহ করা ৮৬টি স্যাম্পল পরীক্ষা করে সেগুলোর মধ্যে ১৩টিতে জিনজিয়ানের তুলা পাওয়া গেছে।তবে কোন ব্র্যান্ডের পণ্য বা কোন দেশ থেকে এসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে গেছে সেটি জানায়নি সংস্থাটি। যেসব পণ্যের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-বক্সার, জিনস, টি-শার্ট ও শিশুদের পোশাক। এগুলো সবগুলোই তুলার পণ্য ছিল। আবার কয়েকটিতে স্পেনডেক্স এবং কৃত্রিম সুতাও ছিল।কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোনো বক্তব্য দেয়নি।যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া জিনজিয়ানের নিষিদ্ধ তুলার পণ্য কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন দেশ পাঠিয়েছে সেটির কিছুই খোলাসা করা হয়নি।তবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল চীনে ২০২০ ও ২০২১ সালে যে পরিমাণ তুলা উৎপাদন হয়েছিল তার ৮৭ শতাংশই ছিল জিনজিয়ানের এবং দেশটি এ দুই বছর বিশ্বব্যাপী যে তুলা বা তুলার পণ্য সরবরাহ করেছে সেগুলোর ২৩ শতাংশ উৎপাদিত হয়েছিল ওই জিনজিয়ানে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের ওই প্রতিবেদেন আরও বলা হয়েছিল, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া এবং বাংলাদেশ-বিশ্বের বৃহৎ তৈরি পোশাক ও তুলা পণ্য উৎপাদনকারী দেশ-চীন থেকে প্রচুর পরিমাণ কাপড় আমদানি করে। আর এসব কাপড়ের বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার পোশাক সরবরাহকারীদের মাধ্যমে তৈরি পোশাক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যায়।
সূত্র: রয়টার্স।