টাইমস ২৪ ডটনেট: বাংলাদেশে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানে টানা বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের জলে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও চকরিয়ায় এবং বান্দরবানে পাহাড় ধসে ও জলে ডুবে ৪ রোহিঙ্গাসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। টানা বর্ষণে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত জলে ডুবেছে চট্টগ্রাম মহনগরের অধিকাংশ এলাকা। ৫ দিনের থেমে থেমে বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। জোয়ারের জল আর বৃষ্টির জল মিশে চট্টগ্রাম শহরের বাসা বাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকেছে জল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। হাজার হাজার পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। রাস্তাঘাটে জল জমে থাকায় অনেক সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। লোকজনকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরবাসীর জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রামে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নিপা পালিত সোমবার বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। জলে ডুবে যাওয়া একটি রাস্তা পার হওয়ার সময় ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী নিপা ড্রেনে পড়ে মারা যান। এরপর বন্ধ কেরে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও টানা বৃষ্টি, জোয়ারের জল ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজার জেলার ১৫টি ইউনিয়নের ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে চকরিয়া, পেকুয়া ও উখিয়া উপজেলার অবস্থা গুরুতর।নদী থেকে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর জলের স্রোতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
টানা ভারি বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও চকরিয়ায় এবং বান্দরবানে আলাদা ঘটনায় ৮ রোহিঙ্গাসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও বেশ কিছু পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছে। আকস্মিক বন্যা ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এছাড়াও বান্দরবানে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ মানুষ। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। জেলায় এরই মধ্যে ২০৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছে প্রশাসন।
এদিকে, টানা বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর জল পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ফলে ফুলগাজী সদরের উত্তর বরইয়া এবং উত্তর দৌলতপুর এলাকায় বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরে জল লোকালয়ে ঢুকছে। ফেনীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া আর উত্তর দৌলতপুর গ্রামের বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে ভাঙন ধরেছে। এতে ৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।