আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। রাতের আধারে শহরটির একটি আকাশচুম্বী ভবনে ড্রোন আঘাত হানে। দুইদিন আগেও মস্কোতে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছিল এবং সেসময়ও হামলাকারী ড্রোন মস্কোর ওই একই ভবনে আঘাত হানে। এছাড়া ড্রোন হামলার পর মস্কোর ভনুকোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আবারও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর একটি আকাশচুম্বী ভবনে গত দুই দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন। তিনি বলেছেন, রাতের আঁধারে বেশ কয়েকটি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে। তবে একটি ড্রোন মস্কভা সিটি কমপ্লেক্সের একই টাওয়ারে আঘাত হানে। গত রোববারও এই একই ভবনটি ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। বিবিসি বলছে, ড্রোন হামলার পর ভবনটির কাচের সম্মুখভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হামলায় কেউ আঘাত পেয়েছেন কিনা তা স্পষ্ট নয় বা কারও আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বশেষ এই হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। তবে কিয়েভ সাধারণত এই ধরনের হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করে না।
এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন বলেন, ‘হামলায় ১৫০ বর্গ মিটারের বেশি গ্লেজিং ধ্বংস হয়ে গেছে’ এবং জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে কাজ করছে। এদিকে ইউক্রেনীয় ‘সন্ত্রাসী হামলা’ নস্যাৎ করার দাবি করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মস্কো অঞ্চলে আরও দু’টি ইউক্রেনীয় ড্রোন বিমান বিধ্বংসী সিস্টেম দিয়ে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। রাশিয়ার একাধিক বার্তাসংস্থা জানিয়েছে, ড্রোন হামলার পর মস্কোর ভনুকোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে গত রোববারও ড্রোন হামলার ঘটনার পর মস্কোর এই বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস সেসময় জানায়, ড্রোন হামলার ঘটনার পর রাজধানী মস্কোর ভনুকোভো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘প্রস্থান এবং আগমনী কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এসময় ফ্লাইটগুলোকে অন্যান্য বিমানবন্দরের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়’। অবশ্য এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরটির কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছিল। এর আগে গত জুলাইয়ের শুরুতে পৃথক ড্রোন হামলার ঘটনায় একই বিমানবন্দরে বিমান চালাচল কার্যক্রম সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। অবশ্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রুশ ভূখণ্ডে বারবার ড্রোন হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে মস্কো। এর মধ্যে গত মে মাসে একবার পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিনেও হামলার চেষ্টা হয়।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০০ কিমি (৩১০ মাইল) দূরে অবস্থিত রাশিয়ার রাজধানী মস্কো এবং এর আশপাশের শহরতলি চলতি বছর বেশ কয়েক দফায় ড্রোন হামলা শিকার হয়েছে। যদিও যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কো ও আশপাশের এলাকা খুব কমই ইউক্রেনীয় হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাশিয়ান শহরগুলোসহ ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং মঙ্গলবারের এই হামলাটি সেটিরই সর্বশেষ উদাহরণ। রাশিয়া এই ধরনের হামলার জন্য বরাবরই ইউক্রেনকে দায়ী করে আসছে।তবে ইউক্রেন কখনোই রাশিয়ার হামলার বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করে না।