আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় চীনের রাজধানী বেইজিং ও এর আশপাশের এলাকায় কমপক্ষে ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া বন্যায় নিখোঁজ হয়েছেন আরও অন্তত ২৭ জন। বন্যাকবলিত এলাকা থেকে আরও হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ের আশপাশের এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ ট্রেন স্টেশন বন্ধ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে স্কুলে সরিয়ে নিয়েছে। বন্যায় অনেক এলাকার বাড়িঘর প্লাবিত ও রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে অনেক গাড়ি। বেইজিংয়ে গ্রীষ্মকালে সাধারণত মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত হয়। তবে গত কয়েক দিনে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদিও চলতি গ্রীষ্মে রেকর্ড-ভাঙা উচ্চ তাপমাত্রা দেখেছে বেইজিং। এছাড়া চীনের উত্তরাঞ্চলীয় অন্যান্য এলাকায় এই ধরনের তুমুল বৃষ্টিপাত খুব কমই দেখা যায়।
প্রত্যেক বছর গ্রীষ্মের সময় চীনের বিশাল অংশজুড়ে বন্যা দেখা দেয়। তবে চলতি গ্রীষ্মে দেশটির উত্তরাঞ্চলে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বন্যাকবলিত এলাকার স্থানীয় প্রশাসনকে আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধার এবং প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হ্রাসে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বেইজিং নগরীর পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় বন্যায় অন্তত ১১ জন মারা গেছেন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ২৭ জন। এছাড়া বেইজিংয়ের পার্শ্ববর্তী হেবেই প্রদেশে আরও ৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় ৫ লাখের বেশি মানুষ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন বলে চীনের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি জানিয়েছে। এর আগে, গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় চংকিং অঞ্চলে ব্যনায় অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই সময় দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় লিয়াওনিং প্রদেশ থেকে আরও ৫ হাজার ৫৯০ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ও যানবাহনে আটকা পড়েন। চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ও ধ্বংসাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। ওই বছর দেশটিতে বন্যায় ৪ হাজার ১৫০ জন মারা যান।
সূত্র: এপি।