আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘উন্নত’ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ (স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশান ট্রিটি) স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর মস্কো অত্যাধুনিক এই অস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল।বার্তাসংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে বুধবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালানোর কথা নিজেই সামনে এনেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে রুশ এই মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার কাপুস্টিন ইয়ার পরীক্ষাস্থল থেকে ‘সফলভাবে মোবাইল গ্রাউন্ড-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমের মাধ্যমে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উৎক্ষেপণ করেছে কমব্যাট ক্রু।’
এতে আরও বলা হয়, ‘নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের প্রশিক্ষণ ওয়ারহেড নির্ভুলতার সাথে সারি-শাগান প্রশিক্ষণ গ্রাউন্ডে (কাজাখস্তান) একটি নকল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।’গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায়ই সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার জন্য হুমকি সৃষ্টি হলে তিনি সেখানে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।মূলত টানা ১৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। পশ্চিমা সহায়তার পুষ্ট ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর হামলায় যুদ্ধক্ষেত্রে মস্কোর সেনারা ব্যর্থতার মুখে পড়েছে। এমনকি অনেক জায়গায় রুশ সেনারা বিপর্যয়ও মোকাবিলা করেছে।
এরই একপর্যায়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ (স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশান ট্রিটি) স্থগিতের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অবশ্য এই চুক্তির অধীনে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক মজুদ সীমিত করতে এবং পারস্পরিক পরিদর্শন রিপোর্ট জমা দিতে সম্মত হয়েছিল।
এরপর সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেন পুতিন। আর এর মাধ্যমে রুশ পরমাণু অস্ত্রগুলোকে কার্যত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ নেন রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট।যদিও ভ্লাদিমির পুতিনের উভয় পদক্ষেপেরই নিন্দা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো।
এদিকে মঙ্গলবারের উৎক্ষেপণে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের ধরণ স্পষ্ট করেনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তারা বলেছে, এই মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল ‘আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত যুদ্ধ সরঞ্জাম পরীক্ষা করা’।
রুশ এই মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ‘এই উৎক্ষেপণের মাধ্যমে নতুন কৌশলগত মিসাইল সিস্টেমের আধুনিকায়নে ব্যবহৃত সার্কিট ডিজাইন এবং প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোর নির্ভুলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।’