আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনার ছড়িয়ে পড়া প্রতিহত করতে মহামারির সময় যে বাধ্যতামূলক মাস্কবিধি জারি করেছিল হংকং, ৯৫৯ দিন পর তা শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বায়ত্বশাসিত এই দ্বীপ ভূখণ্ডের সরকার। চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি এবং হংকংয়ের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জন লি কা-চিউ মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। ব্রিফিংয়ে জন লি কা-চিউ বলেন, ‘এখন থেকে আর ঘরে-বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতমূলক নয়। বাইরে বেরোনোর সময় মাস্ক না পরলে জরিমানার যে বিধান জারি করা হয়েছিল, তা ও শিথিল করা হয়েছে। সরকার এখন থেকে কাউকে মাস্ক পরার জন্য জোর করবে না।’ ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস। শনাক্ত হওয়ার পর অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে ২০২০ সালে ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ঘোষণার পর দেশে দেশে সরকারি উদ্যোগে ঘরে-বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। নাগরিকরা মাস্ক না পরলে আর্থিক জরিমানার বিধানও জারি করে অনেক দেশের সরকার। চীনের প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে থাকা দ্বীপ ভূখণ্ড হংকংয়েও এই নিয়ম জারি করা হয়েছিল। ২০২০ সালের ২৯ জুলাই এক সরকারি আদেশে হংকংয়ে বাড়ির বাইরে যানবাহন ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়। এই বিধি কেউ অমান্য করলে তাকে ১০ হাজার হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৭৩ টাকা) জরিমানা দিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয় আদেশে।
মাস্ক বাধ্যতামূলক করার আগে সামাজিক দূরত্ববিধি, কোয়ারেন্টাইন ও লকডাউনের মতো বিভিন্ন কঠোর বিধিনিষেধও জারি করেছিল হংকংয়ের সরকার। কিন্তু প্রায় দু’বছর এসব কঠোর বিধির জেরে দ্বীপের অর্থনীতি প্রায় স্থবির হয়ে পড়ায় ২০২২ সালের প্রথম দিকে করোনার প্রায় সব বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। তবে বাধ্যতামূলক মাস্কবিধি সে সময় তুলে নেওয়া হয়নি। হংকংয়ের একটি বড় আর্থিক খাত পর্যটন। মহামারির দু’বছরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার এই খাতটিকে ফের পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে সরকার। দেশটির পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরকারের এই নতুন ঘোষণা পর্যটন ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক হবে। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে জন লি বলেন, ‘আমাদের এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে।’