জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: স্যার না বলে ভাই বলায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের ওপর রেগে গেলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন খান। শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুঠোফোনে একটি সংবাদের বক্তব্য নেওয়ার সময় ভাই সম্বোধন করায় স্থানীয় ওই সাংবাদিকের ওপর রেগে যান এসিল্যান্ড। সদর উপজেলার ঘোষেরচর মৌজার একটি জমির বিষয়ে মুঠোফোনে বক্তব্য নিতে ফোন করেন জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ঢাকা পোস্টের স্থানীয় সাংবাদিক আশিক জামান। এ সময় এসিল্যান্ডকে নিজের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার শুরুতেই ‘ভাই যে বিষয়ে ফোন দিয়েছি’ বলাতে ওই এসিল্যান্ড রেগে গিয়ে সাংবাদিককে বলেন, ‘তার আগে বলেন আপনি এসিল্যান্ডকে ভাই কেন বলতেছেন, আমি আপনার কেমন ভাই’। পরে একজন সাংবাদিক এসিল্যান্ডকে কী বলে ডাকবে তা জানতে চাইলে মামুন খান বলেন, একজন সাংবাদিক কী এসিল্যান্ডকে ভাই বলে ডাকবে? আপনার স্যার ডাকতে হবে না। আপনার ভাববেশি। আপনি স্যার বলতে বাধ্য নন কিন্তু মিনিমাম একটা ডেকোরাম আছে।
স্যার ডাকলে তিনি খুশি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না না আপনার স্যার ডাকতে হবে না। কিন্তু কখনো ভাই ডাকবেন না। এটা ফরমাল কোনো ডেকোরাম না।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ রিপোর্টার্স ফোরামের নির্বাহী সদস্য ও স্থানীয় সাংবাদিক বাদল সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংবাদিকেরা কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে স্যার বলতে বাধ্য নয়। যদি তাকে স্যার ডাকতে হয় তবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরাই ডাকবেন। কোনো সাংবাদিক তাদের স্যার ডাকবেন না। এ বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশনাও দিয়েছেন। আর ভাই বলাটা দোষের না।
গোপালগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেত আহমেদ বলেন, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তাকে কেন স্যার ডাকতে হবে। এটা সাংবাদিকতার কোনো নিয়মে লেখা নাই যে একজন রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভ হয়ে একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাকে স্যার ডাকতে হবে। আর ভাই বলা তো দোষ বা ভুল কিছু না। ভাই ডাক শুনে যদি কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারী ক্ষেপে যান তাহলে বুঝতে হবে সেটি তার অহংকারের বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, নিয়মবহির্ভূতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক ড্রেজার মালিককে সাজা দেওয়ায় ও জরিমানা করায় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর এসিল্যান্ড মামুন খানের ৬ মাসের জন্য বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন হাইকোর্ট।
সূত্র: ঢাকা পোষ্ট।