টাইমস ২৪ ডটনেট: রাজধানীর প্রগতি সরণিতে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে নিহত হওয়া শিক্ষার্থী নাদিয়া (২৪) মাত্র ১৫ দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও তা অকালেই ঝরে গেল সড়কে।
জানা গেছে, নাদিয়া ১০-১৫ দিন আগে রাজধানীর আশকোনায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্দান ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তিনি উত্তরা এলাকায় থাকতেন। তার পরিবারের সদস্যরা থাকেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়।পুলিশ সূত্র জানা গেছে, নাদিয়ার বাবার নাম জাহাঙ্গীর আলম। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে। তবে দীর্ঘদিন ধরে নাদিয়ার পরিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাষাড়াতে বসবাস করে আসছে।আরও জানা গেছে, রোববার (২২ জানুয়ারি) নাদিয়া তার এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় ঘুরতে আসেন। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে স্থানীয় একটি মার্কেটের সামনে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে আসা ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে নাদিয়া মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে বাসের সামনের চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে নাদিয়ার মৃত্যু হলেও তার মোটরসাইকেল চালক বন্ধু অক্ষত ছিল। পরে নাদিয়ার মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বজলুর রহমান বলেন, নাদিয়ার পরিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থাকে। ১০-১৫ দিন আগে নাদিয়া রাজধানীর আশকোনায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্দান ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। আমরা প্রাথমিকভাবে যতটুকু জানতে পেরেছি তিনি প্রগতি সরণি এলাকায় আজ ঘুরতে এসেছিলেন। ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে নাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। সেখানে নাদিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তার পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে নাদিয়ার পরিবার মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যায়। এ ঘটনায় নিরাপদ সড়ক আইনে একটি মামলা থানায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভিকটিমের বাবা জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে মামলাটি করছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা না গেলেও ঘাতক বাস ও একটি মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে নাদিয়ার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর রোববার বিকেলের দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক এলাকার কাওলা ব্রিজের নিচে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের এ রাস্তা অবরোধ কর্মসূচির কারণে কয়েক ঘণ্টা বিমানবন্দর সড়ক এলাকায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। তারা অবরোধ কর্মসূচি থেকে নাদিয়ার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, বিকেলের দিকে নর্দান ইউনিভার্সিটির কয়েকশ শিক্ষার্থী কাওলা এলাকার রাস্তা অবরোধ করেন। সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। পরে শিক্ষার্থীদের অনেকক্ষণ অনুরোধ করার পর তারা সন্ধ্যার দিকে রাস্তা ছেড়ে চলে যান।