ডিব্রুগড়ের সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “অসমের ইতিহাসে মুসলমানরা” শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করলেন ড. দেবব্রত শর্মা

টাইমস ২৪ ডটনেট : ডিব্রুগড়ের অন্যতম সামাজিক সংগঠন সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজের বার্ষিক সাধারণ সভার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ডিব্রুগড় ঈদগাহ প্রেক্ষাগৃহে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। “অসমের ইতিহাসে মুসলমানরা” শীর্ষক এই আলোচনা সভায় মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যোরহাট মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. দেবব্রত শর্মা।নিজের বক্তব্যে তিনি বিষয়টির উপর বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে বলেন যে ইতিহাস আজ সম্পূর্ণভাবে উলটপালট হয়ে গেছে; ভারতবর্ষকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ বলা হলেও প্রকৃত ইতিহাসকে উপেক্ষা করে বর্তমানে নিজের মতো করে ইতিহাস রচনা করা হচ্ছে। বাঘ হাজরিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. শর্মা বলেন, এই বীরকে বাদ দিলে অসমের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি আরও বলেন যে মৌখিক ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না। বাঘ হাজরিকা ছাড়া লাচিত বরফুকনের চরিত্রও অসম্পূর্ণ হয়ে যায়।এই অনুষ্ঠানেই উদ্যোক্তা সংগঠনের মুখপত্র “অনুভূতি” উন্মোচন করেন ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী অধ্যয়ন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. নাসমিম ফারহিন আখতার। ‘অনুভূতি’ পত্রিকাটি সম্পাদনা করেন ইমরান হুসেইন।
আলোচনা সভার সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত থেকে লক্ষীমপুর বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট লেখক সাজ্জাদ হুসেইন বলেন যে- বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক সেন্টার রয়েছে। ডিব্রুগড়েও এই সংগঠনটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক কাজ করে চলেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্বাদশ শতক থেকে অসমে ইসলামের আবির্ভাব ঘটে এবং ত্রয়োদশ শতকের আলি মেচ থেকে বিংশ শতকের শেষ ভাগ পর্যন্ত মুসলমানদের আগমন অব্যাহত থাকে। আজান ফকির সাহেবের বহু বছর আগেই অসমে মুসলমানদের আগমন ঘটেছিল। ত্রয়োদশ শতকেই হাজোতে অসমের প্রথম মসজিদ স্থাপিত হয় বলে জানা যায়।মতবিনিময় পর্বে অংশগ্রহণ করেন যোরহাটের বিশিষ্ট সমাজসেবী নুরুল আমিন, লক্ষীমপুরের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাংবাদিক ফারহানা আহমেদ, ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. বরুণ দে, কানই মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা সুদক্ষিণা দাস, মরান মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপিকা জ্যোতিমণি বরদলৈ এবং উদ্যোক্তা সংগঠনের সদস্য ইমরান হুসেইন, মুহিবুল হুসেইন ও আব্দুল মজিদ।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠানের পতাকা উত্তোলন করেন সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজের জ্যেষ্ঠতম সদস্য, নব্বই বছর বয়সী আব্দুল হক। পতাকা উত্তোলনের পর দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, আজ থেকে ২৬ বছর আগে এই সংগঠনটি বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও লেখক ড. মছউদুল হকসহ ডিব্রুগড়ের আরও কয়েকজন জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তির নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল।
কার্যসূচির শুরুতে উদ্যোক্তা সংগঠনের সভাপতি চেহির আহমদ তাঁর স্বাগত ভাষণে ইসলামের শান্তিপূর্ণ রূপটি তুলে ধরে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটির জন্য আগামীতেও সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।
সেন্টারের উপ-সভাপতি আব্দুল খালেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে সম্পাদক এম. হাসিম আলি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।



