মতামত

চোখের পর্দা মনের পর্দা দুটোরই সমান মর্যাদা

সৈয়দা রাশিদা বারী : একটা সময় বাঙালি নারীর সুমার্জিত পরিধান বস্ত্র শাড়ির হাটে, শাড়ি বেচা কেনার ধুম পড়তো! শাড়ির হাট ঢাকার চকবাজার থেকে, মোটামুটি সব জায়গায় বসতো তবে পোড়াদাহ শাড়ির হাট ছিল উল্লেখযোগ্য। নানা জেলাগুলোতে তখন শাড়িও রকম রকম উৎপন্ন হয়েছে। পঙ্খিরাজ, পাকিজা, আনারকলি কোহিনুর, তারপরে হচ্ছে বেদের মেয়ে জোসনা শাড়ি, মেহজাবিন শাড়ি, আলোমতি শাড়ি। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িরও ছিলো নানান ধরন। সিরাজগঞ্জের সুতি শাড়ি, সোনারগাঁয়ের বেনারসি শাড়ি, ঢাকাই শাড়ি, যদিও এসব শাড়ির বেশিরভাগই উন্নত মানের সুতি শাড়ি। রেশমি সুতির শাড়িগুলোও হতো বেশ বাহারে,গরদ সিল্কের ভয়েল জর্জেট কাতান নানান জাতীয়। কুমারখালি পান্টির জোলা কর্তৃক চরকায় সুতা কেটে বুনানো শাড়ি। কারিকর পাড়ার হাতে বুনানো শাড়ি। সেগুলোই বাঙালির প্রচলন ভাষার – মোটা ভাত মোটা কাপড়। পাবনায় বুনিয়াদি শাড়ি। ময়ূরপঙ্খী শাড়ি। মতিহার শাড়ি। পাছা পাড়ে শাড়ি। মালতি লতা, জুই চামেলি। বেলি বকুল ফুল বা জংলি ছাপার শাড়ি‌। বাটিক বা বুটিক শাড়ি ইত্যাদি। তখন মেয়েদের জন্য রংবেরঙের এসব শাড়িই ছিল বিনোদনের ঊর্ধের গিফট। সম্মান করে মেয়েদের শাড়ি গিফট দিত। এখন আরাম আয়েশ বৃদ্ধি করতে বা সময় বাঁচাতে শর্টকাট পরিধান বস্ত্র জীবন সংগ্রামে নারীরা বেছে নিয়েছে। তাই থ্রি পিচে ঝুকে পড়েছে। ২০/৩০ বছর আগেও শাড়ি পরার প্রচলন অনেক বেশি ছিল। তখন আপডেট ঘরের রমণী মেক্সি বেগী স্কার্ট থ্রি পিস এমন ইত্যাদি জাতীয় পোশাক পড়লে সমালোচনার ঝড় বইতো তার উপরে। ওই সময় শুধু স্কুল-কলেজের মেয়েরা ছাড়া থ্রি পিস পরতে সাধারণত মহিলারাও লজ্জা পেতেন। এখন নাবালিকা সাবালিকা আবাল বৃদ্ধা বনিতা সবাই একই রকম থ্রি পিচ পরছে বিনা দ্বিধা এবং লজ্জায়। শাশুড়ি হোক আর নানী দাদি হোক থ্রি পিস পরাতে আর সমস্যা নাই। বলা যায় শাড়ি এখন কেউ পড়ে না। জ্বালা সমালোচনা করত আপডেট মেয়েদের ব্যবহার বা পড়া দেখে, তারাও পড়ছে। বড় এবং ভালো কোন অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ি পরা ছেড়ে দিয়েছে সব কুলের মহিলা। মানে যুগের রুচি পছন্দ জ্ঞান চিন্তা চেতনা ঘুরে গিয়েছে। আগের সাধারণ এবং নিম্ন শ্রেণীর মানুষ পর্যন্ত এই শাড়ি পড়ত। এখন শাড়ি পড়ে না, অভিনয় শুটিং বা বিয়ে বউ ভাত অনুষ্ঠান স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির ফাংশন ছাড়া। বাংলাদেশ পরবর্তী থেকে দিনে দিনে কমতে কমতে, মহিলাদের এক চাটিয়া তাঁতের শাড়ি কাপড় গুলোর ব্যবহার বর্তমান এখন নাই বললেই চলে। বর্তমানে এমন হয়েছে যে, শাড়ির ব্যবসা নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এখন শিশু থেকে বৃদ্ধা প্রায় সমহারে চলছে হিজাব নিকাব বোরখার ব্যবসা। ভালো তো। ইরাক ইরানের নারীদের ব্যবহার করা জিনিসটা বাংলাদেশে ভ্যারাইটিজ আইটেম বাণিজ্য হচ্ছে। উৎপাদন হচ্ছে। ৩০ বছর আগে দেখা যাচ্ছে ওইসব জায়গা থেকে এনেই বাংলাদেশে আমদানি করা হতো। তাও অর্ডার পেয়ে গেলে যেত। আমিই এর প্রথম কাস্টমার তাই আমিই এর প্রমাণ। একবার হয়েছে কি, আমার ডাক্তার বোন ইরান থেকে আমার জন্য আলাদা কাপড়ের মাথা ঢাকার স্কাপ এনে দিয়েছে। তারপরে আমার স্কাপ পড়ার অভ্যাস হয়ে যায়। তখন আমি স্কাপ বেঁধে পথ চলতে রাস্তার মহিলারা আমার ফলো করে দাঁড়িয়ে যেত। হাত উঁচু করে আঙুল দিয়েও আমাকে দেখা তো। কিন্তু ব্যস্ত আমি পাত্তা না দিয়ে চলে যেতাম। মাত্র দুইটা প্রতিদিন ব্যবহার করছিলাম। আমার আরও কয়টা দরকার, প্রয়োজন মনে করে কুষ্টিয়া শহরের সকল মার্কেট তন্ন তন্ন করে খুজলাম। কেউ দিতে পারল না তবে বলল অর্ডার দিয়ে যান এনে দেবো। আমি পাঁচটা অর্ডার দিলে ওরা দশটা নিয়ে আসে। আমি পাঁচটা কিনে নিয়ে, দুইদিন পরে ওই বাকি পাঁচটা আনতে গেলে, তারা আর দিতে পারি নাই ঐদিনই বিক্রি হয়ে গেছে বলে। এর পূর্বে ঢাকাতে ঢাকার সকল মার্কেটে খুঁজেও পাই নাই। যা হোক কিছুদিন পর হতেই পাওয়া যেতে লাগলো। এভাবে চাহিদার জন্য এখন বাইরে থেকে আনতে হয় না। বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে। বোরকার ব্যবসাও জাকজমক ভাবে চলতেছে। চলুক কিন্তু বাধ্যতামূলক তো হতে পারে না। যেমন হিজাব নিকাব স্কাপ আমিই বাংলাদেশে প্রথম ব্যবহার করা চালু করেছি। অর্ডার দিয়ে আনিছি। এখন আমিই শরীরের কারণে আর পড়তে পারি না। এটাকে কি বলা যেতে পারে?? কি বলবেন??!! আমি আগে ভালো ছিলাম? এখন খারাপ হয়ে গেছি?! আমি নয় সকলেই দেখে কিছু কিছু মানুষ যারা খারাপ, তারা পোশাক বলে কথা নাই। তারা এমনিই খারাপ। যেমন কিছু পুরুষ দাড়ি রাখলেও খারাপ। নারীও আছে হিজাব নিকাব বোরখা পরলেও খারাপ। শিশু বলাৎকার যেমন দাড়ি-টুপি আলখেল্লা পরিধান করা পুরুষরাই সাধারণত বেশি করে। হিসাব নিকাব বোরখা ব্যবহারকারী নারীরাই বেশি অপকর্মে জড়িত। শিশু মদ গাঁজা পাচার ইত্যাদি খারাপ কর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। তাই সে খারাপ সে পর্দা করেও খারাপ। যে ভালো সে পর্দা না করেও ভালো। ভালো-মন্দর সাথে পর্দার সম্পর্ক নাই। এই যে যারা বিভিন্ন অকর্মের সাথে লিপ্ত থাকে, এইসব ব্যক্তির ক্ষেত্রে চোখের পর্দা নয়, তাদের মনের পর্দা ছাতা প্রয়োজন। যথারীতি তাই ভালো-মন্দ থাকা, না থাকা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। পর্দার ব্যাপারে যার শরীরে যে রকম সহ্য হবে, সেটেল হবে খাপ খাবে, শারীরিকভাবে পারদর্শিতার ব্যাপারও আছে। যে যেরকম শরীর স্বাস্থ্য অনুযায়ী, শরীরের কাপড়ের ভর সইতে পারবে, সেটাই তার জন্য ঠিক আছে। এই ব্যাপারেও জোর জুলুম করে চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। বিয়ের ব্যাপারে পুরুষের কাঁধে বেশি দিলমহর চাপিয়ে দেওয়ার মতো অন্যায়। বরং নগদ পরিশোধ বা দিয়ে দেওয়ার যতটুকু সামর্থ্য থাকবে, সামর্থ্য অনুযায়ী তেমন দিলমোহর ফিক্সড করাই ভালো। আর দিলমহরটা বিয়ের মাধ্যমে নারীর লিগাল প্রাপ্তি। ভবিষ্যৎ জীবনের সিকিউরিটি। যেহেতু স্বামীটা চেঞ্জও হতে পারে, স্বামী হাজবেন্ড কারো স্থায়িত্ব সম্পদ নয়। বাবা মা যেমন স্থায়িত্ব সম্পদ। সন্তানের উপরে আস্থা রাখা চলে না তাই বলা স্বাভাবিক সন্তানও জোরের জিনিস নয়। স্থায়িত্ব সম্পন্ন নয়। বিয়ে করলে সন্তান পর হয়েও যায়। বিশেষ করে পুত্র বিয়ে করলে পুত্রবধূর হয়ে যায়। মায়ের আর থাকেনা। আর পুত্রবধূ হয়ে যায় শত্রু। তাহলে সন্তান কি জোরে কিছু হল? সন্তানকে কেউ খেলে না। মা-বাবাকে ফেলে। এটাও বুঝতে হাই ক্লাস গবেষণা করতে হবে। অতএব সকল নারীর মোহরানা মা বাবার মত স্থায়িত্ব আস্থা। কারো ফিরিয়ে নিয়ে এমনকি স্বামীরও স্ত্রীর মোহরানা ব্যয় করার অধিকার নাই। নারীর উপরে এটা জরুরী ভাবে বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। ওটা নারীর ভবিষ্যতের জন্য রাখা থাকবে। স্বামীর ঘরে যে কয়দিন থাকবে তার কর্মের বিনিময়ে সে খাবে পড়বে। এমনকি বাচ্চা দেওয়ার বিনিময় সে আলাদাভাবে। আর বাচ্চার মানুষ করার পিছনের পরিশ্রম, পেটে ধরা দুধ খাওয়ানো ইত্যাদির মূল্য, প্রাপ্ত বয়স হয়ে উপযুক্ত সময়ে আয় ইনকাম শুরু করলে, ওই সন্তানই আমৃত্যু পর্যন্ত তার ইনকামের একটা কমিশন দিতে থাকবে মায়ের ঋণ পরিশোধ করার দায়িত্বের জায়গা থেকে। মা মারা গেলেও সন্তান যতদিন বেঁচে থাকবে, ইনকাম থেকে কমিশন মায়ের প্রাপ্তি, সন্তানের দিতেই থাকতে হবে। দেখা যাচ্ছে মায়ের নামে মায়ের প্রাপ্তি পুঁজি করে, মসজিদ মাদ্রাসা এতিমখানা অথবা কোন দুষ্ট জনের পড়ালেখার দায়িত্ব বহন করে, ওই অর্থ তার পিছনে বিনিয়োগ করে, নানান সেবামূলক কাজে মায়ের নামে বিনিয়োগ করে যেতে হবে। আর দিলমহরের ওই টাকাটা স্বামীর সংসারে ভাঙ্গা রাইট নয়। কিন্তু সেটা কয়জন মানে? কেউ মানে না। কোন কোন চালাক স্বামী বিয়ের রাত্রে মোহরানা পরিশোধ তো করেই না। আরো উল্টো করে স্ত্রীর কাছ থেকে মাফ চেয়ে নেয়। এবং মেয়ের বাবা মায়ের থেকে যৌতুক নেয়! মোহরানার টাকা মাফ ই যদি হবে, তাহলে আর সেটা বাধার কি প্রয়োজন? সেটা কেন বাঁধতে হবে??!! দেখা যাচ্ছে একজন পুরুষ তার ক্ষমতার বাইরে লাখ লাখ টাকা দিল মোহর বাধে। কিন্তু না দিয়ে, না পরিশোধ করে, স্ত্রীর কাছ থেকে বাসর রাতেই আবার ক্ষমা চেয়ে নেয়! এর অর্থ কি দাঁড়ালো?! বরং কম দিল কাবিনে দিল মোহর কম করে, তা নগদে পরিশোধ করে দিলে, স্ত্রী ফিক্সড একাউন্টে সেদিন থেকে রাখলেই তার ভবিষ্যতের জন্য ভালো। এর জন্যই তো জন্মদাতা বাবা কন্যাকে পুত্রের অর্ধেক দেয়। তাহলে আর এটা মাপ করে দেওয়া যাবে কেন?! কারণ তার ভবিষ্যৎ বলে কথা আছে। স্বামীর চিরদিন ভাত কাপড় দেয়ার গ্যারান্টি নাই যেহেতু। সন্তানের উপরও ভরসার গ্যারান্টি নাই। না বৃদ্ধ হলে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে পুত্র সন্তান অসহায় বৃদ্ধ মাকে বাসা থেকে ঘারে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়! স্বামী মারা গেলেও উত্তর এবং পুত্রবধূ ওই বিধবা অসহায় নারীর দায়িত্ব নিশ্চিত ভাবে নেয় না। খাওয়া পড়া থাকা চিকিৎসা ইত্যাদির নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয় না। মাকে অনেক ধৈর্য সহ্য অপমান অপদস্ত অনুনয়-বিনয় করে ছোট হয়ে থাকতে হয়! তবুও তারা খেতে পড়তে দেওয়া, ঘুমাবার জায়গা দেওয়া, মোট কথা রাখার বিনিময়ে, মায়ের জীবদ্দশায় যা কিছু থাকে, লিখে নিতে চাই। মৃত্যু হলে তো পাবেই সেটা মানে না। জীবদ্দশায় লিখে নিতে চাই! দেনমোহর ফিক্সড একাউন্ট করে, ভবিষ্যতের জন্য, বৃদ্ধ বয়সের জন্য কাজেই তার রাখতে হবে। শুধু তারই ভবিষ্যতের জন্য। অতএব পুরুষ বিবাহ করতে যতটুকু দেনমোহর পরিশোধ করতে পারবে, নগদ দিয়ে দিতে পারবে, ততটুকু করলেই ভালো। দেনমোহর দিতে যেমন পারবেনা তেমন চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। কাপড়চোপড় বেশি বেশি গায়ে রাখা, চুল ছেড়ে দিয়ে ফেকম উঠিয়ে থাকা, মাথায় বাতাস না লাগিয়ে অতিরিক্ত ঢাকা, মুখ কান চোখ বেধে থাকা বা রাখ, এগুলো শরীরের হরমোনের সাথে কানেক্টেড। যেহেতু দম বন্ধ হয়ে ফাপড় ছুটে যাওয়ার অবস্থান বিষয়! তাই সবার জন্য বাধ্যতামূলক ওটা হতে পারে না। শরীর স্বাস্থ্যর হনমনের সাথে পুরাপুরি সম্পর্ক আছে। সবাই একরকম খুলে রাখতে বা বেঁধে রাখতে পারে না। ঘর বন্ধ জানালা বন্ধ রেখে সবাই ঘুমাতে পারে না। এসি ঘর সাজস্য রাখে। নাসিত না গরম এটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবুও সবার শারীরিক জায়গা থেকে শরীরে সইবেনা। সয়না। অভ্যাস করতে চাইলেও অভ্যস্ত হতে পারেনা। আমারই তো সয়না। জোর করে কি আর সব হয়?! নির্যাতন শব্দের উৎপত্তি তো এই কারণে হয়েছে। জুলুম অর্থাৎ নির্যাতন। সহ্যের বাইরে অসহ্য সহ্য করা। শারীরিক মানসিক সবার সবকিছুর সাইকোলজিক্যাল যোগ্যতা পারদর্শিতা একরকম না। কেউ আছে একদম কাপড় যত দিয়ে ঢাকা যায়, যত ঢেকে থাকে, তত তার ভালো লাগে। তার শরীর ভালো থাকে। আবার কেউ আছে ওভাবে থাকতে পারে না। শরীর নষ্ট হয়ে যায়। কারেন্ট এর মত কাজ করে বলতে, খুবই দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফাপর ছুটে মারাও যায়! এমনও তো আছে, কোন একটা নারী যেমন দশটা পুরুষকে সইতে পারে। শরীরে মানিয়ে নিতে পারে। ভাত যেমন অনেকেই বেশি খায়। কোন ব্যাপার নয় তার কাছে। আবার এমনও কোন নারী আছে, তার একটা পুরুষকেও মানিয়ে নেওয়ার নয়। অর্থাৎ একটা পুরুষ সে সইতে পারে না। এই ব্যাপারে সহ্যের ক্যাপাসিটি নাই। এটা আল্লাহ যার যেমন ভারসাম্য বওয়ার পারদর্শিতা, ক্যাপাসিটি শক্তি বল যোগ্যতা দিয়েছেন, সে তেমন ওয়েট বহন করতে পারেন। পেটের ভাত যেমন সবাই একরকম খায় না। কারো খাবার বেশি লাগে, কারো কম লাগে। কোন পুরুষ যেমন একটা স্ত্রীকেই চালাতে পারেন না। ভয় পান। তা আবার একাধিক?! এমন পুরুষের জন্য প্রশ্নই নাই সেটা ভাবার। সবকিছুর বেলায় সেম। তাই সুযোগ এবং নিয়ম থাকলেও পুরুষ সবাই ৪টে বিয়ে করতে পারেনা! এমনও পুরুষ আছে, ইনভেলিড! অপদার্থ! শরীর স্বাস্থ্য ভালোই দেখা যায় কিন্তু ওই বেলায় নিস্তেজ, তেজহীন, অক্ষম অযোগ্য, যোগ্যতা নাই! বাইরের মানুষ তো সেটা বোঝে না? সেটা নারী জানে, যার যার স্ত্রী সেই জানে তার স্বামীর কতটুকু পাওয়ার! যোগ্যতা। এক স্ত্রীকে সে খুশি করতে পারে না। ভেঙে পড়ে, মুচকে যায়, অসুস্থতাই ভোগে! তার একজন স্ত্রীর সাথে সেপুরুষ হাপসে যায়। হাঁপিয়ে ওঠে। খুশি করতে পাড়ার প্রশ্নই নাই। সে কি চারটে বিয়ে করতে পারে?? আছেই তো এমন পুরুষ, মাসে একবারের জন্যও এক স্ত্রীকে সে খুশি করতে পারে না! তার স্ত্রীর সাথে সে একত্রিত হওয়ার বিষয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে! তাই ভয়ে স্ত্রীকে এড়িয়ে চলে! তাহলে এর কি চার চারটে বউ রাখার দরকার আছে?? মনে রাখতে হবে বিশেষ দরকারের নামই সময়ের দাবি। সময়ের দাবির কারনেই প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৪৭ পর ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র স্বাধীনতা আন্দোলন, ২৪’র গণঅভ্যুত্থান স্বাধীনতার পর প্রতি স্বাধীনতা আন্দোলন, হয়ে আজ এ দেশ আছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে এখতিয়ারে। কি সাংঘাতিক তাই না?? তাহলে সময়ের দাবির কারনেই নারীর শাড়ির বাজারই শুধু নষ্ট হয়েছে তা নয়। রাজনীতির মাঠও আমাদের আকাশ পাতাল পার্থক্যের হয়েছে। উল্টো হয়ে পড়েছে। এরকম প্রত্যেক সেক্টর রদবদল পূর্বেও হয়েছে বর্তমানেও হচ্ছে ভবিষ্যতেও হবে। তবে বর্তমানে আমরা শেষ নবীর উম্মত। তাই অনেক কিছুরই চেঞ্জ নাই ধর্মের কারণে। কিন্তু হচ্ছে তো গোপনে নীরবে নিভৃতে। মানুষ মানুষের প্রয়োজন মেটাচ্ছে ঠিকই, পার্থক্য হচ্ছে গোপনে আর প্রকাশ্যে। সময়ের দাবিটার মর্যাদা নাই তা নয়। এক সময় ছিল বুকের দুধ খাওয়ালে নারীদের বডি নষ্ট হয়ে যেত। এবং শিশুরও ক্ষতি হতো। এখন কিন্তু বুকের দুধ না খাওয়ালে মেয়েদের ক্যান্সার হয়, শিশুও অপুষ্টিতে ভোগে। পরিপূর্ণ পুষ্টি পায় না। ৬ মাস পর্যন্ত এখন বুকের দুধ শিশুকে খাওয়ানো বাধ্যতামূলক। যে কারণে প্রয়োজন বলে এবং যোগ্যতা পারদর্শিতা বলেও কথা আছে। দুইটারই মর্যাদা রাখা দরকার। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। ঠিক এ রকম হিজাব নিকাব বোরকা এগুলো পড়াও যোগ্যতার ব্যাপার। বাধ্যতামূলক সবকিছুই করা যায় না। সময়ের দাবির সাথে মিলিয়ে চোখ এবং মন দুইটার সামঞ্জস্যতা রাখতে মূল্যায়ন করতে হবে। চোখের আড়াল হলেই যেমন মনের আড়াল হয় না। আমরা যখন রোজা রাখি তখন কিন্তু চোখে দেখানোর জন্য রাখি না। ওটা মনের চাহিদার জন্য রাখি। তাইতো এর নাম ছিয়াম সাধনা। এই কারণে মনের নিয়তটারও একটা মর্যাদা আছে। নিয়ত করে রোজা রাখতে হয় এবং ইফতারি খেয়ে রোজা ভাঙতে হয়। এখানেও কিন্তু মনের প্রাধান্য রয়েছে। শুধু চোখের প্রাধান্যতা রোজা রমজানের ইবাদত, সিয়াম সাধনায় নেই। এইজন্য কথায় আছে, নিয়ত আগে ঠিক রাখতে হবে। নিয়তে ভেজাল গন্ডগোল থাকলে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি, আল্লাহর ডাকার সব কর্মসূচি কর্মকাণ্ড বরবাদ হয়। মানুষ তো পশু না তাই অবশ্যই পর্দা করতে হবে। বে ভন্ড বেপর্দা হওয়া যাবে না। বিষয়ন্ত সাধারণ সৃজনশীল পোশাকের উর্ধে কিছু নেই। মন পরিচ্ছন্ন পবিত্র রেখে, সৃজনশীল পোশাক ব্যবহার সব চাইতে শ্রেষ্ঠ। বেস্ট। এর সাথে বোরকা হিজাব নিকাব ব্যবহার সেটা ব্যক্তির ইচ্ছা যোগ্যতা পারদর্শিতার উপর নির্ভর করে। বাধ্যতামূলক সেটা হবে জুলুম করা। ব্যক্তিগতভাবে ঘরে হালকা পাতলা কাপড়ে থাকা যায়। এটা সমস্যা নাই কিন্তু বাইরের লোক সম্মুখে সৃজনশীল পোশাখ পড়লেই বেটার। এর উপর বেস্ট কিছু নাই। চোখের পর্দা মনের পর্দা কোনটা বড়?? যে ভালো হয় সে পর্দা না করেও ভালো হয়। স্বাভাবিক পোশাকে থেকেও ভালো। যে খারাপ হয় সে নাকি পর্দা করেও খারাপ হয়। এটা জনগণের চেতনার উদ্ধৃতি চেতনার জবাব। চোখের পর্দা মনের পর্দা কোনটাই ছোট বড় নয়। মান নির্ণয়ে এবং প্রকৃত অর্থে দুটোই সমান মর্যাদার। শুধু চোখ নয়, জনগণের কাছে ভালো থাকতে হলে, মনও ঠিক রাখতে হবে।

১০.১১.২০২৫ইং, রাত ১টা, সোমবার।

Related Articles

Back to top button