অর্থনীতি

বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকদের মর্যাদা গভীরভাবে সংকুচিত

বিশেষ প্রতিনিধি : বেসরকারি প্রতিষ্ঠান “ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি” ঢাকায় কর্মরত পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত নারী শ্রমিকদের নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। এই গবেষণায় দেখা যায়, নারী শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে অনেক বিড়ম্বনার শিকার হয়। তারা উপৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও তাদের নেই চাকুরির নিশ্চয়তা। প্রতিনিয়ত তারা কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হয়। তাদের দূরবস্থার কাহিনী ফুটে উঠেছে গবেষণায়। পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত নারী শ্রমিকরা তাদের জীবন সংগ্রামের কাহিনী বর্ণনা করেন। তারা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করলেও নূন্যতম বেতন তাদের নেই, নেই ভালভাবে বেঁচে থাকার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। সেই সাথে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলে তাদের জীবন। ছেলেমেয়েদের শিক্ষা নেই, চিকিৎসা নেই, পেট পুড়ে খাবারের নিশ্চিয়তা নেই। কাজের মধ্যে নেই কোন গতিশীলতা। জীবন সংগ্রামে টিকে আছে অনেক কষ্টে।

ধানমণ্ডির প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে আলাপ হয় বেশ কয়েকজন নারী শ্রমিকের সাথে। তারা জানায়, তাদের দৈন্যন্দিন জীবন কাহিনী।

সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত বেশ কয়েকজন নারী পোশাক শ্রমিক তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এরমধ্যে নাসরিন, সেলাই অপারেটর বলেন, “স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি কাজের চাপ দ্বিগুণ করেছে, এক্ষেত্রে বেতন নয়।”

রোশন বেগম কোয়ালিটি চেকার তিনি বলেন, মেশিনের গতি আমাদের বিশ্রাম কেড়ে নিয়েছে। শিরিন, সিনিয়র অপারেটর বলেন, “দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পরও আমরা কর্মক্ষেত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছি

আফরোজা বেগম বলেন, “নতুন মেশিন আমাদের প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রতিস্থাপন করেছে। ইস্ত্রিকর্মী জান্নাত বলেন, বাষ্পীয় মেশিন চালাতে শারিরীকভাবে আহত হয়েছি। কেউ দেখার নেই। এছাড়াও অটোমেশনের ফলে হেল্পার বাদ দেওয়ায় তাদের উপ মারাত্মক কাজের চাপ বেড়েছে৷

নিম্নমজুরি: উৎপাদনশীলতা বাড়লে ও আয় রয়েছে অপরিবর্তিত। জীবন ধারণের জন্য ন্যায্য মজুরি পেলে সমাজে টিকে থাকা সম্ভব হবে। কোনমতে নারীরা প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ থেকে বাদ পড়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার রয়েছে। বাধ্যতামূলক পুনঃপ্রশিক্ষণ ও ডিজিটাল শেখার সুযোগ পেলে নারীদের শ্রমিকদের জীবনে বৈচিত্র্যতা আসবে । স্বল্পপ্রতিনিধিত্ব: নেতৃত্ব ও প্রযুক্তিগত পদে নারীর অভাব কার্যত তাদেরকে পিছিয়ে রেখেছে।

আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন ও নারী ইউনিয়ন নেত্রীদের সুরক্ষা হলে প্রকৃতপক্ষে তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নত ঘটবে বলে গবেষণায় জানা যায়।

ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নীতি নির্ধারক র্পায়ের দাযিত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প যেন স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যতে শ্রমিকদের সম্মান, ন্যায্য মজুরি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাহলে নারী শ্রমিকদের প্রত্যাশা স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ন্যায় ও মর্যাদার ক্ষেত্র কিছুই প্রশমিত হবে।

গবেষণায় দেখা যায়, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির নামে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ফলে পরিবর্তিত পরিস্থতিতে নারীদের কর্মসংস্থান, চাকুরীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

Related Articles

Back to top button