হযরত শাহ নুরির (রঃ) বংশধর দাবি করে প্রতারণা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: রাজধানীর মগবাজারের প্রসিদ্ধ বুজুর্গ হযরত শাহ নুরি (রঃ)-এর মিথ্যা বংশধর দাবি করে চেরাগি আবু তালেব ও তার ছেলে চেরাগি শাহ আবু তাহমিদ প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে। নথিপত্র বিশ্লেষণে এমন প্রতারণা ফাঁস হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, নবাব খাজা আহসান উল্লাহ হযরত শাহ নুরি (রঃ) মসজিদ ওয়াকফ এস্টেটের চেরাগি শাহ আবু তালেব তার বিরুদ্ধে চলমান ৩২ (১) ধারার মামলার জবাবে হযরত শাহ নূরী (রঃ)-এর ছেলে শাহ মোহাম্মাদী (রঃ)। হযরত শাহ মোহাম্মাদী (রঃ)-এর ছেলে হযরত শাহ আব্দুল হামিদ (রঃ)। আর হযরত শাহ আব্দুল গোলাম হামিদ (রঃ)-এর ছেলে শাহ সামসুদ্দিনকে (রঃ) বলেন চেরাগি শাহ আবু তালেব। অথচ সি এস ৪৯-নং খতিয়ান বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে শাহ সামসুদ্দিনের পিতা মৃত. হযরত শাহ গোলাম হামেদ । হজরত শাহ আব্দুল হামিদ (রঃ) এবং শাহ সামসুদ্দিনের পিতা মৃত. গোলাম হামেদ ভিন্ন ভিন্ন ব্যাক্তি। চেরাগি আবু তালেবের পুর্ব পুরুষ সামসুদ্দিন ছিলেন বেতনভুক্ত নবাব এস্টেটের চেরাগি অর্থাৎ মাজারে সন্ধায় কুপি জ্বালানো এবং মাজার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। কিন্তু তিনি নিজেকে তার বংশধর দাবি করছেন।
এছাড়াও চেরাগী শাহ আবু তালেব, নবাব খাজা আহসান উল্লাহ হজরত শাহ নুরীর (রঃ) মাজারের প্রথম মোতোয়ালি দাবী করেন। যা মিথ্যা ও ভ্রান্ত হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
আরও জানা যায়, হযরত শাহ নুরী (রঃ) ইন্তেকাল করেন ২৫৯ বছর আগে। অথচ ১৯১৩ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে ওয়াকফ বোর্ড গঠিত হয়েছিল এবং ১৯২৩ সালে প্রথম ওয়াকফ নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করা হয়েছিলো। পরে ১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন সংসদে পাস হয়। কিন্তু লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, আজ থেকে ২৫৯ বছর আগে হযরত শাহ নুরি (রঃ) এই দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। তাহলে কিভাবে আবু তালেব প্রথম মোতোয়াল্লি হিসাবে আবেদন করলেন? চলতি ২০২৫ সাল হযরত শাহ নূরী (রঃ)-এর ২৫৯ তম ওরশ অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসাবে তিনি ১৭৬৮ সালে ইন্তেকাল করেন, অথচ ওয়াকফ কমিশন গঠিত হয় ১৯০৫ সালে। বর্তমানে তার ছেলে শাহ আবু তাহমিদ হযরত শাহ নুরি (রঃ)-এর অষ্টম বংশধর দাবি করছেন। কিন্তু সি এস খতিয়ানে শাহ শামসুদ্দিনের পিতার নাম গেলাম হামেদ। এখানে পিতার নাম আব্দুল হামিদ দেখিয়ে মিথ্যা বংশধর দাবি করছেন চেরাগী শাহ আবু তালেব। যা মানুষের সাথে প্রতারণা করার সামিল বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, ওয়াকফ থেকে তোলা সার্টিফাই কপি থেকে জানা যায়, শাহ শামসুদ্দিনের ছেলে শাহ গোলাম নুরি ১৯৩৫ সালের ৯ আগস্ট ওয়াকফতে তালিকাভুক্ত করার জন্য আবেদন করেন।