
টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: রাজউকের এসেস্ট-২ এর এডি আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্তে বের হয়ে এসেছে সম্পদের পাহাড়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ। এখনো দুদকের তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, রাজউক-এর অন্যতম দুর্নীতিরবাজ কর্মকর্তা এসেস্ট-২ এর এডি মো. আব্দুস সাত্তার-এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম করে বিগত ১৮ বছরের শত কোটি টাকার মালিক হওয়ায় তদন্ত শুরু হয়েছে। দুদক আব্দুস সাত্তারের হিসাব চেয়ে একাধিক বার নোটিশ প্রদান করেছে। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মো. আব্দুস সাত্তার চাকরি জীবনে প্রথমেই পূর্বাচল এস্টেট এ ৩ বছর চাকরি করেন। আর এই তিন বছরে তিনি ভুয়া ছাড়পত্র দিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সেখান থেকে পদোন্নতিপেয়ে ১৫ বছর এক টানা ঢাকার তেগগাঁও, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মোহাম্মদপুর ও আদাবরসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সার্ভেয়ায়ের দায়িত্ব পান। আর এই সুবাদে দুর্নীতিবাজ মো. আব্দুস সাত্তার নকসার ভুয়া ছাড়পত্র দিয়ে সে সময়ে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। বিগত ১৭ বছর বীরত্বে সাথে আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে দু’হাত ভরে কামিয়ে এখন শত কোটি টাকার মালিক ।
সূত্র জানায়, এডি মো. আব্দুস সাত্তার সার্ভেয়ার থাকা কালীন সময়ে গ্রাহকের ছবি পরিবর্তন করার মুল হোতা হিসেবে তাকে সবাই চিনেন। শত শত ছবি পরিবর্তন করে তার বিনিময়ে আব্দুস সাত্তার ৫ লাখ টাকা করে উৎকোচ নিতেন। বিগত ৬/৭ বছর আগে ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকায় ভুয়া নকসা দেয়ার কারণে ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তারকে ৩ ঘণ্টা আটকে রেখে গণধোলাই দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে ছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে থানায় সোপর্দ না করে আপোষ মিমা!সা করে সে সময়ে তিনি রক্ষা পান।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার দীর্ঘ ১৮ বছরে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজউকে যে কয়কজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোটিপতির তালিকায় আছেন তার মধ্যে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার। রাজউকের উত্তরা এস্টেট শাখার তিনি যেন ত্রাস, তার কথা ছাড়া ডিডিও ফাইলে স্বাক্ষর করেন না।
এই রাজউক কর্মকর্তা বর্তমান কর্মকর্তা মেম্বার এডমিন গোলাম মোস্তফার নাম বিক্রি করে সবাইকে জিম্মি করে রেখেছেন। অপর একটি সূত্র জানায়, মো. আব্দুস সাত্তার সার্ভেয়ার থাকাকালীন সময়ে সে সময়ের চাকরিচ্যুত মাসুম বিল্লার সাথে মিলে মিশে কাজ করতেন। আর তখন পূর্বাচল এস্টেটে মাত্র এই দুই কর্মকর্তাই সব অপকর্ম করে বেড়াতেন। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী নুরুল হুদা চেয়ারম্যান থাকা কালিন সময়ে তার সাথে আতাত করে মিলে মিশে অবৈধ কাজ করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজউকের বর্তমান এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, কোটিপতি রাজউক অফিসের সব চেয়ে সুবিধাভোগী ছিলেন বর্তশান এস্টেট-২ এর এডি মো. আব্দুস সাত্তার। তিনি চাকরি জীবন থেকে সুবিধাজনক জায়গায় চাকরি করে আসছেন। যুগে যুগে যে চেয়ারম্যানই অসুফ না কেন সব কিছুই তিনি ম্যানেজ করতে পারেন। তার বাড়ি গাড়ি প্লট, ফ্ল্যাট কোন কিছুরই যেন তার অভাব নেই।
আব্দুর সাত্তারের সব চেয়ে বড় শক্তি বর্তমান রাজউকের মেম্বার এডমিন গোলাম মোস্তফা। রাজউকের সব কর্মকর্তা কর্মচারী তার কাছে জিম্মি। ভরে কেউ কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জয় বাংলা সেøাগান দিয়ে এখন তিনি বিএনপির বড় নেতা । এক সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থ যোগান দাতা হিসেবে তিনি অনেক ভূমিকা রাখতেন। এখন রাতাবাতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পদ পদবী নেয়ার জন্য জোড় লবিং করছেন। এ ব্যাপারে রাজউকের বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজুুর সাথে ও প্রতিবেদক কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নাই।
গত ২৩ আগস্ট দুদুপুর ২টার দিকে এ ব্যাপারে এ প্রতিবেদক সরেজামিনে তার অফিস কক্ষে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নর। গত রোববার আব্দুস সাত্তারের মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক কথা বললে তিনি জানান, তিনি কোন অনিয়ম ও দুর্নীতিও সাথে জড়িত না।অপর এককি সুত্র জানান, রাজউকের এই দুর্নীতিবাজ এডি আব্দুস সাত্তারের মতো কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারণে পুরো ডিপার্টমেন্ট দুটামে স্বীকার হচ্ছে। এদেরকে দ্রুত তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।