
টাইমস ২৪ ডটনেট: প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সোমবার (২৫ আগস্ট) ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জায়ে মিউং। দ্রুত পরিবর্তনশীল ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিনের পুরোনো দুই মিত্রের মধ্যে বৈঠক ঘিরে তৈরি হয়েছে অনেক প্রত্যাশা। তবে ট্রাম্পের কাছ থেকে নিজেদের স্বার্থ আদায়ের বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ওয়াশিংটনেরত উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে লি বলেছিলেন, তিনি বৈঠকের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ‘ট্রাম্প: দ্য আর্ট অব দ্য ডিল’ বইটি পড়েছেন।বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বৈঠকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলা, ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং যে কোনও মূল্যে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়িয়ে চলাকে প্রাধান্য দেবেন প্রেসিডেন্ট লি।
এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের বিশেষজ্ঞ ভিক্টর চা বলেন, কোনও চটকদার খবর তৈরি না করে বৈঠক শেষ করতে পারাই হবে লি’র জন্য একটি অর্জন।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন একাধিক শীর্ষব্যক্তি। এই তালিকায় রয়েছেন ইউক্রেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এবং বিভিন্ন বৈশ্বিক সংগঠনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সাবেক দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের অপসারণের পর গত জুনে আয়োজিত এক তাৎক্ষণিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন লি জায়ে মিউং। দেশে সামরিক আইন জারি অভিশংসিত ইউন উত্তর কোরিয়ার প্রতি তার কঠোর অবস্থানের জন্য ওয়াশিংটনের প্রিয়পাত্র ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এছাড়া, নিরাপত্তার জন্য সেনা মোতায়েন ও পারমাণবিক নিবৃত্তকরণের (নিউক্লিয়ার ডেটারেন্স) মাধ্যমে প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রদান করে আসছে হোয়াইট হাউজ। প্রেসিডেন্ট লি এখন শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার চীনকে অসন্তুষ্ট না করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলার একটি ভারসাম্যপূর্ণ পথ খুঁজছেন।অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়াকে আগে থেকেই মার্কিন সামরিক নিরাপত্তার ফায়দা নিয়ে অর্থ উপার্জনের যন্ত্র হিসেবে কটাক্ষ করে আসছেন ট্রাম্প।
এই বৈঠকের আগে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দলকে বেইজিং পাঠিয়েছেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট। তারা সম্প্রতি চীন-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অস্থিরতা স্বাভাবিক করার জন্য বার্তা পৌঁছে দেন।গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক চাপের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিরা শেষ মুহূর্তে একটি চুক্তি করেন, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের সবচেয়ে কঠোর ব্যবস্থা এড়ানো যায়। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির নানা খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা এখনও বাকি।দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা আশা করছেন, এসব বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনাগুলো ভবিষ্যতের বৈঠকে সীমাবদ্ধ থাকবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক শীর্ষ নীতিনির্ধারক কিম ইয়ং-বম বলেছেন, আমরা চাই এই শীর্ষ বৈঠকে বাণিজ্য খাতে বাস্তবায়ন পরিকল্পনার ইস্যু আপাতত না আসুক, অন্তত আলোচনায় থাকলেও তা যেন খুবই সীমিত হয়। বাণিজ্য নিয়ে গতবারই সমাধান হয়েছে। এখন নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আলোচনার আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।