
টাইমস ২৪ ডটনেট: যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এই পরিকল্পনায় কাজও শুরু করেছে।মূলত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রোববার (২৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অপরাধ, গৃহহীনতা ও অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়ার পর এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে কয়েক হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “শিকাগো একেবারে এলোমেলো অবস্থায় আছে। আমরা সেটি পরবর্তী সময়ে ঠিক করব”। এ সময় তিনি শহরটির মেয়রকেও কড়া সমালোচনা করেন।
শনিবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে পেন্টাগন জানায়, “ভবিষ্যৎ কোনো অভিযানের বিষয়ে আমরা আগে থেকে বলতে চাই না। প্রতিরক্ষা দপ্তর একটি পরিকল্পনামূলক সংস্থা, যা নিয়মিত অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে ফেডারেল সম্পদ ও কর্মীদের সুরক্ষায় কাজ করে।”হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জেবি প্রিট্জকার ডেমোক্র্যাট দলের নেতা। তিনি বলেন, শিকাগোতে সামরিক সহায়তার প্রয়োজন আছে বলে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে অঙ্গরাজ্যকে কোনোভাবে অবহিত করা হয়নি। তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে ন্যাশনাল গার্ড বা অন্য কোনো বাহিনী মোতায়েনের মতো জরুরি অবস্থা নেই।”প্রিট্জকার আরও বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন, সেনাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ পরিবারগুলোর দুঃখ-কষ্ট থেকে মনোযোগ সরাতে
চাইছেন।”শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসনের মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে শুক্রবার জনসন বলেছিলেন, শহর প্রশাসন এ ধরনের অবৈধ সেনা মোতায়েন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্টের এ ধরনের পদক্ষেপ সমন্বয়হীন, অপ্রয়োজনীয় এবং অযৌক্তিক”। মেয়র আরও জানান, গত এক বছরে শিকাগোতে হত্যাকাণ্ড ৩০ শতাংশ, ডাকাতি ৩৫ শতাংশ এবং গুলির ঘটনা প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে।এর আগে গত সপ্তাহান্তে ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনটি অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর শত শত ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানোর ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, রাজধানী শহরটি অপরাধে ভরপুর। তবে বিচার বিভাগীয় তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ওয়াশিংটনে সহিংস অপরাধের হার ছিল গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
এর আগে গত জুনে ফেডারেল অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভ চলাকালে ট্রাম্প সে অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট গভর্নরের বিরোধিতা সত্ত্বেও লস অ্যাঞ্জেলেসে ৭০০ মেরিন ও ৪ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য পাঠান।