
সৈয়দা রাশিদা বারী:গত ২১. ৮. ২০২৫ ইং প্রথিতযশা সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকার মেঘনা নদীতে দেহত্যাগ আত্মহনন আত্মহত্যা আত্মবলিদান যাই বলা যাক না কেন? উনি নিজে ইচ্ছাকৃত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন! এরপূর্বে তার লিখে যাওয়া প্রতিবেদনের একটা উদ্ধৃত স্বীকারোক্তি ‘সত্য বললে মরতে হবে’ এই উক্তিটা নিয়ে নানা জনের নানা মন্তব্য ঝড় তুলেছে। আমিও পড়লাম বিশাল কলেবরটি! বুঝলাম এবং উপলব্ধি করলাম! তার লেখার পরিপ্রেক্ষিতে আমার কিছু বলার নাই বিস্মিত হওয়া ছাড়া! তবে সব কথার এক কথা, অধিকাংশ লেখকই ঋতু রানীর প্রতিনিধি, যেমন মৌসুমী পাখি, মৌসুমী ফুল। মৌসুমী পাখি মৌসুমী ফুল কারো কি পরোয়া করে? প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য প্রকৃতির চাহিদায় কর্তব্যরত ফুল পাখির স্বাধীনতায় কোন ভয়, কেউ পারেনা বাধা দিতে এবং আটকাতে! আর দেশের অবস্থা পরিবেশ পরিস্থিতি মোকাবেলার ক্রান্তি কালে, রাজনীতি সমাজনীতি অর্থনীতি ধর্ম নীতি ইত্যাদি নীতি, যতনীতি আছে সব নীতি, মোটকথা লেখকদের জীবদ্দশায় ঘটে যাওয়া সবই কিন্তু মৌসুমী প্রবৃত্তি, প্রকৃতি ও ঋতু। ফুল পাখির মৌসুমী প্রকৃতি ঋতু গাছ পালা চাঁদ সূর্য বৃষ্টি বন্যা পাহাড় নদী ঝর্ণাধারা ইত্যাদি। আর লেখকের যাপিত জীবনের যত প্রক্রিয়া ওই সবই মৌসুমী প্রকৃতি ও ঋতু। লেখালেখিতে একদম চামচা দালাল দলবাজি করার কথা আলাদা। কিন্তু সাধারণ লেখক যারা, যারা জাত লেখক, ভাব লেখক, সব্যসাচী লেখক তারাও তো মৌসুমী পাখি, মৌসুমী ফুলের মতো। মৌসুমী কি? শুধুই কি গাছ ঘাস তরুলতা নদী পানি বন পাহাড় এবং ৬ বৈশিষ্ট্যের ঋতুগুলো মিলিয়ে প্রকৃতি!? ফুল পাখির মৌসুমী অবশ্য ওই গুলো! আর মানুষের মৌসুমী ও প্রকৃতি, বিশেষ করে লেখকের, সেটা কিন্তু প্রথম থেকেই বোঝাচ্ছি দেশের অবস্থান! দশের চলন বলন! পরিস্থিতি! নারী জাতির দুঃখ দুর্দশা! এখন মৌসুমী অনুযায়ী লেখা মানে সমসাময়িক রচনাই তো নাকি?? আমরা কিন্তু চর্যাপদে পাই তখনকার রীতিনীতি জ্ঞান ও কাহিনী। ফেরদৌসী শাহনামা বিশাল কাব্যেও ঐরকম পাই।দেবদাস উপন্যাসে পাই শরৎচন্দ্রের আমলের কাহিনী। মীর মোশাররফের নীলদর্পনে পাই জমিদারী ব্যবস্থার সমাজতন্ত্র অর্থাৎ তখনকার প্রথা রীতিনীতিটা মীর মশাররফের আমলের কাহিনী। আবার দেখতে হবে রিসেন্ট লেখকদের লেখালেখির ধারাবাহিকতা। কোন লেখকই কিন্তু মিথ্যে কথা লেখেন না? চলচ্চিত্র গুলোও ঠিক প্রকৃতির কথা বলেছে সমসাময়িক ব্যবস্থা রূপকথায় বা উপকথায় তুলে ধরে। দৈনন্দিন পত্র পত্রিকাতে উঠে আসা বা পাবলিশারের প্রকাশিত গল্প উপন্যাস নাটক ফিচার প্রতিবেদন প্রভৃতি রচনা, সবসময়ই যুগের সাক্ষী বহন করে। পত্রপত্রিকা গুলোও যে গরম খবর বিশ্লেষণে সব রচনার আলামত। লেখক এবং পত্রপত্রিকা অতপরিতভাবে জড়িত যুগের সাথে সময়ের সাথে। রাজা বাদশা প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মহান আল্লাহর নিয়ন্ত্রণের ষড়ঋতু কম্পিউটার বা খাতা কলম ফাইল পত্র যেসব ফেরেশতার হাতে আছে, আল্লাহর সমীপে উত্থাপনের দায়িত্ব রত অর্থাৎ কথিত বাংলা ভাষায় চাকুরী রত, উল্টাপাল্টা তারাও লিখতে ভুল তথ্য দিতে পারেন না। কোন ঘুষ মৌলিক দায়িত্বের এখানে চলে না। প্রকৃতির অবস্থান প্রখর খরা রোদ বৃষ্টি ঝড় তুফান সাইক্লোন ঘূর্ণি বাউ, বিদ্যুৎ চমকানো এবং ডাক পড়া ইত্যাদি সঠিক পরিমাপ সময় জ্ঞান অনুসারেই লিখতে হয়, আল্লাহর কাছে জমা দেওয়া খাতায় দায়িত্বরত ফেরেশতাদের ! মিথ্যে লিখলে তাহলে কি তাদের চাকরি থাকে?? আল্লাহও তো কর্মের সার্ভিস মনঃপুত না হলে, সঠিক না হলে, তার প্রতিনিধির বিতাড়িত করেন। দায়িত্ব অনুসারে দেশের পরিস্থিতি হাল অবস্থার বর্ণনাই তো একজন লেখক সাহিত্যিক সাংবাদিক দায়িত্বের জায়গা থেকে পেশ করেন। আমি কিন্তু চামচা দালালকে বাদ রেখে কথা বলছি। দেশ চলে ৪ দিকের ৪টা প্রক্রিয়ায়। মানে ৪ টা খুঁটির বলে। ১. মহান স্রষ্টার কৃপা! ২. সরকারি আমলাতন্ত্রের কার্য পরিধি বল। ৩. রাজনৈতিক খসড়া শক্তি। ৪. সাংবাদিকের তথা সম্পাদকের টেকসই সংবাদ পরিবেশন। চৌকসনুর, চৈতন্যশিখড়, শিখাঞ্জলি, হ্যাচাকবোট অর্থাৎ এক নিষ্ঠ তথ্যসম্বলিত উত্থাপন ও কবি সাহিত্যিকের কলমের মহাআচড়! বাক্য শব্দ বর্ণের এই অগ্নিশ্বরই তো পৃথিবীটাকে স্মৃতির আয়নায় ধরে রাখে ইতিহাস রচনা করে! বা ইতিহাসে সংশ্লিষ্ট থেকে। এই যে আমি একটা কথা বলবো বা বলছি এটাও যদি কারো দালালি করা ধরে নেয়?! কিছুতো করার নাই কিন্তু সঠিক সত্যি বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উদঘাটনে কথা তো কারো না কারো বলতে হবেই?? ডিসকাশন করতেই হবে। নইলে চলবে কিভাবে দেশের অস্তিত্বর ভারসাম্য বহতা! প্রকাশক সম্পাদকের উপরেও আঙ্গুল তোলা হয়! আঙ্গুল তুলে আঙ্গুল ঝাকালেই তো হবে না? সমসাময়িক সময়ের ঘটনাক্রম লিখতে ও প্রকাশ করতে হবে মৌলিক কিছুই ধামা চাপা না রেখে। কেন এখানে সত্যি প্রকাশের গলায় দড়ি, মাথায় বাড়ি থাকবে?! ‘সত্য বললে মরতে হবে?’ লেখালেখির প্রেক্ষাপটে বাক স্বাধীনতায় বাধা আসবে? আর পক্ষা পক্ষিতে সেটা চলে যাবে?? দলমুখী হতে দলের প্রশ্নে লেখককে টানবে? একজন লেখককে তার কর্মের স্বীকৃতি পেতে, মূল্যায়ন পেতে, সরকারি দলের তেল মাখাতে হবে? কেন দলবাজির মাঝে রাখবে গোটা দেশ। কর্মের মূল্যায়ন পেতে দল মুখি হতে হবে? বাচার স্বার্থেও হতে হয়! লেখকের লেখায় এমনি অনায়াসে থাকবে সমসাময়িক চাহিদা এবং যুগ উপযোগী অবকাঠামো গত সবকিছু। কোন চাপের মুখে নয় এমনিতেই তথ্যগরিষ্ঠ লেখায় তো লেখক লেখেন। রাজনীতি করে ভোট নিয়ে, সংবিধানিক অধিকার, নাগরিকত্বের প্রাপ্তি বুঝিয়ে না দিয়ে, দেশের নাগরিকের ধোকা তো আর লেখক দেন না?? যখন যে দেশ পরিচালকরা যা করেন তাই লিখেন। তাহলে কেন লেখার জন্য দোষারোপের মুখোমুখি লেখকের হতে হবে! আজ নয় পূর্ব থেকেই লক্ষণীয়। নীলদর্পণ জমিদার দর্পণ জমিদার কাহিনী ও বিষাদ সিন্ধুর লেখক মীর মোশারফ হোসেন, ধুমকেতু, রিক্তের বেদনসহ প্রভৃতি সঠিক তথ্য বহুল বিদ্রোহী রচনা লেখায় কাজী নজরুলসহ প্রভৃতি লেখককে শাস্তি পেতে হয়েছে। কিন্তু সেটা ছিল ব্রিটিশদের নিষ্পেরন। আমরা তো এখন নিজেরা নিজেরাই আছি দেশে। নিজেদের মধ্যে নিষ্পিরণ দুঃখজনক! যা কিছু ঘটনাক্রম এগুলো তো লেখকের লেখাটা লিগাল। শাস্তি দাতারা অন্যায়কারী। সামাজিক রাজনৈতিক প্রভৃতি প্রেক্ষাপট আর সার্বিক পরিস্থিতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং উপযুক্ত পরিস্থিতির উপযুক্ত জবাব, এটাকেই তো বলে প্রয়োজন মেটানো, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া মোকাবেলা করা। এটাই গণতন্ত্রের বিকাশ। সাধীকার ও স্বাধীনতার প্রকাশ। লেখক সম্পাদক পত্রপত্রিকার অন্যান্য অবলম্বন সব মিলিয়ে এটাই ইতিহাস। ইতিহাসটা বিকৃত করতে লেখকের কলম প্রস্তুত থাকেনা। তাইতো নিঃস্বার্থে সঠিক সত্যি তুলে ধরেন। কিন্তু সেটা দল বল ফলাও করা নানান দলে আক্রান্তদের সমস্যা হয়ে পড়ে! তাহলে কি কারো ঘুমের সমস্যা হওয়ার জন্য ভোরে পাখি গান গাইবে না! কোকিল কু কু করবে না? ঝিঝি পোকা ঝি ঝি রব ধরবেনা?! শেয়াল হুয়া হুয়া করবে না?! ফুল ফুটবে না? চাঁদ উঠবে না? সূর্য তাপ দেবে না? রাস্তায় কাদা হবে তাই বৃষ্টি পড়বে না? ঘর বাড়ি ডুবে যাবে বলে বন্যা হবে না? গাছ ভেঙে যাবে বলে, ঝড় উঠবে না?? এইগুলো কিন্তু একদম অন্যায় লেখকের উপরে চাপিয়ে বা বরতে দেওয়া! নিজেদের দোষে লেখকের দোষ দেওয়া! লেখার প্রতিবন্ধীকতা সৃষ্টি করা! সম্পাদকের প্রকাশকের দোষ দুর্বলতা খোঁজা!! পাঁচ বছর পরে পরে দেশের রাজনৈতিক হাল অবস্থা ক্ষমতা উত্থান পতন চেঞ্জ হয়ে আসবে অন্যপক্ষ । লেখক সেই ভাবে লিখবে। পত্র-পত্রিকা সেই ভাবে বের হবে, সমস্যা কি?কেউ জন্ম নিবন্ধন নিতে গেলে, দায়িত্বে থাকা মানুষের সই লাগবে, দায়িত্বে থাকা আলা, যখন যে দল বহাল থাকে, সেই দলের মানুষ থাকে! দল এভোয়েড করে জন্ম নিবন্ধন তাহলে কি নিবে না, দলের সই স্বাক্ষরের কারণে? দলের উপর স্পৃহা হিংসা প্রবৃত্তির মতো একটা কিছুতে আক্রান্ত হওয়ার তুচ্ছ অসুস্থ ভয়ে?? ততদিন কি তাহলে কাজ না করে ফেলে রাখতে হবে? ঠিক এরকম আরো অন্যান্য কাজ, যখন যে দল থাকে তার থেকেই উদ্ধার হতে হয়, উদ্ধার হতে যা করতে হয় তাই কলা লাগে! সাধারণ খেটে খাওয়া জনসাধারণের। সমসাময়িক সময়ে উদ্ধার হওয়ার জন্য ঘাড়ে দোষ চাপালে এবং এইরকম রাজনীতি দেশে চললে মানুষ যাবে কোথায়? এই দল ওই দল কোন দলের কাছেই কাজ করতে না গেলে, তার জীবনটাই তো কেটে যাবে? জীবন কয়দিনের?? উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কাজ না করলে সময় তো থেমে থাকে না। সময় কারো জন্য বসে থাকে না, অপেক্ষা করে না। তাইতো কাজ করতে হয় উদ্ধার হতে হয় রাজনৈতিক দের মহড়ায় গিয়ে জনসাধারণের। যে দলই হোক আসবেই চেঞ্জ হয়ে। সাধারণ রাজনীতিমুক্ত মানুষের, যে আসবে তার কাছেই যেতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে চলতে হবে। দেখা যাচ্ছে দলের পাওয়ার চলে গেলেই সেই দল পচে যায়! ওই দলের সই সাক্ষ্যর রাখাও তো সমস্যা! অনুচরে বাঁচাও তো সমস্যা। আবার সরকারের সাথে না চললে, সরকারের বিরুদ্ধে গেলে, সে হয় দেশদ্রোহী। এই পিছুটান রাখাও খারাপ। থাকাও খারাপ। তাহলে মানুষ কাজ করার জন্য যাবে কোথায়? বা কাজ মানুষের কিভাবে উদ্ধার হবে? অথবা কাজ না করে চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত ঢালে খাবে? এসব অজগুবি কথা ও চিন্তাভাবনা গুলো খুবই কষ্ট নিও! মুক্তচিন্তক ও রাজনীতি মুক্ত বাস্তব ধর্মী মানুষ, খুবই সংকটা পণ্য। আসল কথা হলো, থাকা লাগবে উন্নত মন মানসিকতা। নিম্নমানের অথবা সূক্ষ্ম পরিকল্পিত ধারণা এইগুলোই সমস্যার। যাপিত জীবনের কোন বিষয় ব্যর্থ প্রলাপ নয়। কিন্তু লেখকর লেখাটা ব্যর্থ প্রলাপ ধরে তাচ্ছিল্যতা করা হয়! যদি বিভুরঞ্জনদা মারা না যেতেন, তাহলে তার এই লেখাটাই অবমূল্যায়ন হতো। আমরা উল্টাপাল্টা অর্থ বানাতাম। আমরা রহস্য করতাম। যাই করা লাগে করতে হয় রাজনৈতিক দলগুলোর খুন সুটির জন্য! লেখক কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক পত্র পত্রিকা এই সমস্তর কোন দোষ ধরতে হয় না। রাজনীতি করে যারা খাবে তারাই নিজেরা ঠিক হয়ে থাকতে হয়। তাহলে আর কারো বলা আটকানো লাগবে না। দোষীরা পাছে লোকে কিছু বলে, এই মনোপন্থী সংকীর্ণতায় ভুগবে না। যত সব সংকীর্ণতার আড়াল ঘোচাতে রাজনৈতিক ও আমলা তান্ত্রিক ব্যক্তিরা ঠিক হয়ে থাকতে হবে। সুষ্ট ও সুস্থ পথে থাকতে হবে। কবি সাহিত্যিক সাংবাদিকের দোষ না ধরে। পত্রপত্রিকার দোষ না ধরে। তারা যেভাবে চালাবে, রিমোট কন্ট্রোল করবে, নাট বল্টু ঘোরাবে, সেই ভাবেই যাতা কল চলবে। এবং হতে থাকবে সব। বাতাস যেদিকে বয়, স্রোত যেদিকে ধায়, সব তো সেই দিকেই ধাবিত হয়। এটা ন্যাচারাল বিষয়, প্রাকৃতিক টান, প্রকৃতির উত্থান পতন। পূর্বেই বলেছি রাজনীতিটা সমাজনীতিটা এটাও কিন্তু প্রাকৃতিক ভারসাম্য। মানুষের সামাজিক ঋতুর আহবান। একজন কলম যোদ্ধা, শব্দ সৈনিক, লেখক এর জন্য। সমসাময়িক সময়ের যাবতীয় প্রেক্ষাপট, নিয়মিত ধারাবাহিকতা অনুসারে লেখকের লেখায় ফুটে ওঠে! তার বয়স এবং লেখায় বহাল থাকা কাল পর্যন্ত। এটা উঠবেই! তার যুগ তার কাল তার শতাব্দী তার জীবন অস্তিত্ব কর্ম পরিধি প্রত্যেক লেখকের লেখায় মঞ্জুরিত হওয়া, এটায় তো বাস্তবতা। এটাই তো ইতিহাস। যেমন চর্যাপদ, ফেরদৌসী শাহনামা প্রভৃতি লেখা সময়ের হিসাব মোকাবেলা করে। এটাই তো স্বাভাবিক। এখন দুর্বলতা থাকলে আছে দেশ পরিচালকদের। এখানে লেখকদের ঘারে কাঁঠাল ভাঙা, খুব খারাপ। লেখকদের কোন দোষ কোন অন্যায় মোটেও নেই।
বাস্তবধর্মী মানব ধর্মী লেখকরা কোন দলের হাতে হাত, চোখে চোখ রেখে কথা বলে না। কলম কলমের নীতি আদর্শ ব্যক্তি সত্তা পালন করে। তাই কারো কোন দলের চোখ রাঙানোর পাত্তা দিতে পারে না! কারণ উজান পালি চক্ষু লজ্জায় কলম চালালেও মন চলে না লেখকের! ভূত পেট কিচ্ছা কাহিনী, প্রহসন লেখা ওগুলো কাল্পনিক তাই আলাদা হিসাবের জিনিস। কিন্তু বেশিরভাগ লেখকই তো মানবধর্মী বাস্তব ধর্মী। নাটক সিনেমা চলচ্চিত্র, গল্প কবিতা উপন্যাস, এগুলো দেশ রাষ্ট্র মাটি মানুষ সমাজের বিলকুল তুলে ধরে। সঠিক তথ্য থেকেই সৃষ্টি হয়। যা হোক আমি আর কিছু বলতে চাই না। একজন বস্তুনিষ্ঠ কলম যোদ্ধা বিভুরঞ্জন সরকার ( মৃত্যু ২১. ৮. ২০২৫ইং)’র অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর জন্য দুঃখ পাওয়া ছাড়া কিছু করার নাই। উনার জন্যই আমার এই কথা ইচ্ছার বাইরে, অইচ্ছার জায়গা থেকে, লেখা হয়ে গেলো। যুগে যুগে লেখক কবি সাহিত্যিকরা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টে ভোগেন এবং এ ধরনের অযৌক্তিক অন্যায়ের সামিল হন। এই ভালো মানুষদের অনাআসে মৃত্যু বরন করতে হয়! এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যু প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও গীতিকার জন্ম: সূত্রে পশ্চিমবঙ্গ হাওড়ার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় (২. ৫.১৯৩১-৭. ৯.১৯৯৯ ইং) এরও হয়েছিল। তিনি হুগলি নদীতে একটি লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন! সাধারণ মানুষের কটু কথা কটুক্তি নিন্দা সমালোচনা থেকে বাঁচতে চির শীতল গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন! রবীন্দ্র সংগীত এর প্রখ্যাত শিল্পী শাদী মুহাম্মদ(৪.১০. ১৯৫৭-১৩. ৩. ২০২৪ ইং) ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে, আত্মহত্যা করেছিলেন! এটাও সাধারণ মানুষের নির্যাতনের জন্য। জ্ঞানীগুণীদের দিকে ছোট চোখে তাকানো, হেয় প্রতিপন্ন অপদস্ত করা, আঙ্গুল তুলে কথা বলা! এসবের নামই নির্যাতন। নির্যাতন গায়ের আঘাতের থেকে মনে আঘাত বড় এবং বেশি দ্রোহ জ্বালা যন্ত্রণা দেয়! মহান আল্লাহ এই অন্যায়গুলো সইবার, বরদাস্ত করার, ক্ষমতা ধৈর্য সহ্য, সব জ্ঞানী গুণীদের দিন, যেন এরপরে আর এরকম জ্ঞানী গুণীর মৃত্যু না হয়। সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের নামে বেনামে প্রকাশিত সকল রচনা বলি অমর হোক এবং তার আত্মার শান্তি ও স্বর্গে বাস মহান আল্লাহ মঞ্জুর করুন। আমিন।
২৩.৮.২০২৫ইং, রাত ১টা, শনিবার।