নিষেধাজ্ঞার পর ইরান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিতে

টাইমস ২৪ ডটনেট: আমেরিকান ম্যাগাজিন ফরেন অ্যাফেয়ার্স স্বীকার করেছে যে ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ চাপ নীতি শুধু যে ইরানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে ব্যর্থ হয়েছে তাই নয় একইসাথে পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা শক্তিশালী করে এ দেশটিকে এই অঞ্চলে আরও প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে, আমেরিকান এই প্রকাশনা স্বীকার করেছে যে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের “সর্বোচ্চ চাপ” নীতি কেবল ইরানকে পিছু হটতে বাধ্য করতে তো পারেইনি বরং তেহরান এই সময়ের মধ্যে তার প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে এবং এ অঞ্চল এমনকি বিশ্ব অঙ্গনে একটি প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছে।এই প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ সালে পারমাণবিক চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের ঘটনা এটা ভেবে হয়েছিল যে, তাদের ধারণা ছিল নিষেধাজ্ঞার বোঝা চাপিয়ে ইরানকে পুনরায় আলোচনার টেবিলে ফেরাতে বাধ্য করা যাবে। কিন্তু শত্রুরা যা ভেবেছিল ঠিক তার বিপরীত হয়েছে। অর্থাৎ “ধৈর্য ও প্রতিরোধের” কৌশলের মাধ্যমে ইরান তার অর্থনীতিকে সচল রাখতে, তার পারমাণবিক কর্মসূচি ত্বরান্বিত করতে এবং আঞ্চলিক নেটওয়ার্ককে আরও সক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে।ফরেন অ্যাফেয়ার্স আরও লিখেছে যে জেসিপিওএ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাবার পর ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ড তো থামেইনি বরং একই সময়ে, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং অঞ্চলের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের স্বার্থের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করেছে। সৌদি আরবের বাকিক তেল স্থাপনায় হামলা এবং সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ প্রতিরোধ বাহিনীর শক্তিমত্ত্বার প্রমাণ।
এই আমেরিকান মিডিয়ার মতে, এমনকি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আইআরজিসির সাবেক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে শহীদ করার পরেও ইরানকে পিছু হটতে বাধ্য করতে ব্যর্থ হয় এবং ইরাকে অবস্থিত আইন আল-আসাদ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা থেকে আমেরিকার দুর্বলতা প্রমাণিত হয়।
মার্কিন ফরেন অ্যাফেয়ার্স আরও স্বীকার করেছে, যে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার অসংখ্য প্রতিবেদন সত্ত্বেও জেসিপিওএ থেকে ওয়াশিংটনের প্রত্যাহার থেক তেহরান এ বার্তা পেয়েছে যে; আমেরিকা একটি অবিশ্বস্ত দেশ এবং এর কোনও গ্যারান্টি নেই যে মার্কিন প্রশাসনের সাথে চুক্তি পরবর্তী প্রশাসন বাতিল করবে না। তাই অস্থায়ী চুক্তির উপর নির্ভর না করে, ইসলামী ইরান তার পারমাণবিক, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ক্ষমতা শক্তিশালী করার দিকে মনোনিবেশ করেছে এবং এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ইরানি ড্রোন এখন বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে স্বীকৃত। ফরেন অ্যাফেয়ার্সের মতে, এখন এটা স্পষ্ট যে কেবল চাপ এবং নিষেধাজ্ঞা ইরানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করার জন্য যথেষ্ট নয়।
সূত্র: পার্সটুডে।