
সৈয়দা রাশিদা বারী:গণতন্ত্রের মূলধন কি? স্বাধীনতা যেমন, অন্যের প্রাপ্তি অধিকার ছেড়ে দিয়ে, নিজেও নিজের অধিকারের প্রাপ্তি পাওনা বুঝে নেওয়া, এরকমই তো? আসলে এ বিষয়ে ডিসকাশন ব্যাপক পরিসরের বিষয়। আবার যদি সেটাকে কেউ প্যাচ না বাধাই, কুমতলব না খাটায় তবে খুব ছোট্ট এবং সহজ একটা বিষয়। কাজেই আমি ডিসকাসনে না গিয়ে সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকেই বলছি। হ্যাঁ বলছি ভাষা সৈনিকদের বহুত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া, জীবনের সর্ব পর্যায়ের সুখ শান্তি বিসর্জন দেওয়ার ফল স্বরূপ পাওয়া, তাদের প্রিয় দেশের দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করেই বলছি। ভাই ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ জুলুম করা ঠিক না। এটা কারো জন্যই ঠিক না। দেশের উন্নয়ন উন্নতি বজায় রাখতে চাইলে, নিজ স্বার্থ নয়, সমষ্টিগত স্বার্থে নিরপেক্ষ থাকবে। থাকতে হবে। আবার গণমানুষের মধ্যে, যার যেটা ভালো লাগবে, সে সেটা করবে। ব্যক্তি স্বাধীনতাই হস্তক্ষেপ না করা, সেটাই গণতন্ত্রের মূলধন। নির্বাচনের সুস্থ পরিপন্থী ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’। এমন মানসিকতার না হলে, বাধা দিয়ে বেড়ালে, রাতের আঁধারে টাকা দিয়ে কিনে লুণ্ঠন করে নিলে, অথবা জোর জুলুম অত্যাচার চালিয়ে, শাসন ভয়-ভীতি দেখিয়ে লুণ্ঠন করলে অথবা নিষিদ্ধ ইত্যাদি করে বেড়ালে, সেটা তো গণতন্ত্র হয় না। গণতন্ত্র মুখ দিয়ে বলা নয়, কাজে কর্মে রক্ষা করা রে ভাই অনেক কঠিন। যে ভাষা সৈনিকদের প্রতিষ্ঠিত দেশের হাল ধরে, হাল ধরার সুযোগ পাই, ভাষা সৈনিকদের অবর্তমানে, ভাষা সৈনিকদের দরদের দেশের প্রতি অত্যাচার করে! জন্মদাত্রী মা ছাড়া সন্তানের দরদ ব্যথা আসলে কেউ বোঝেনা!! তাই আমার দেশের কষ্ট দুঃখ দুর্দশা ঘুচাবার দায়ভার কেউ নিতে পারল না! নিলেও কেউ সঠিক মত দায়িত্ব পালন করলো না। সেই যদি মানে রক্ষক যদি ভক্ষক হয়, তাহলে এই দুঃখ রাখার জায়গা কোথায়? ব্যক্তি স্বার্থন্বেষী হয়ে পড়া যাবে না। নিরপেক্ষ থাকতে হবে। সেটা না হলে, তেমন না থাকলে, জ্বালাময় রে ভাই, সাধারণ মানুষের। তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণরা বলেন ‘তাহলে আর এর তাড়িয়ে, ওর তাড়িয়ে লাভ কি?এরশাদের তাড়ানো হয়েছিল, খালেদার তাড়ানো হয়েছিল, হাসিনার তাড়ানো হয়েছে, মানে ক্ষমতার চুত করা হয়েছে সবাই একতাবদ্ধ হয়ে, যেসব কারণে! আবার যারা দেশের ক্ষমতা পায়, যাদের হাতে এদেশের ক্ষমতা দেওয়া হয়, তারাও যদি অনিয়ম বা এসব করে?! তাহলে আর এর ওর ঘারে ধাক্কা দিয়ে, পেটে লাত্থি দিয়ে, ক্ষমতাচ্যুত করে, তাবিয়ে দিয়ে কি লাভ??!! দেশ ভালো রাখতে হলে, দেশের মানুষের ভালো রাখতে চাইলে, এই পরিপন্থী হতে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের যেই পরিস্থিতি হালঅবস্থা একই যদি হয়, সেই যদি থাকে এবং যা কিছু অন্যরাপদ থাকে, অপরাজনীতি অরাজকতা শৈরাশাসন স্বৈরাচারিতা বৈষম্য ! বৈষম্য নিপাত না হয়? ক্ষমতার রদবদল করে কি আদৌ কোন ভাল ফল হয়, হবে, হচ্ছে? ভাইরে মানুষ মারা, মানুষের পালিয়ে বেড়ানো, দেশের থেকে বাহির করে দেওয়া, অপমান অপদস্ত করা, অপবাদ দেওয়া, এটা কোন ভালো কাজ, সুষ্ঠু সমাধান নয়’। হ্যাঁ ঠিকই তো, ভাইরে রাগ করো না। আমি কোন দলের পক্ষ নিয়ে বলছি না। আমি সাধারণ মানুষের মন এবং সর্বন্তকরণের কথায় রিপিট করলাম। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দূর হওয়া প্রয়োজন। সাধারণ তথা সকল মানুষের যোগ্যতার মূল্যায়ন দেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন। মেধার মূল্যায়ন না করা হলে, অনেক সময় মানুষ অমানুষ হয়ে যায়। আত্মহত্যাাও করে। যেমন মেধা দীপ্ত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী, শাদী মোহাম্মদ অভিমান করে মারা গেলেন! খুব বেশিদিনের কথা নয়! তবে আত্মহত্যার থেকে বিপথগামীই বেশি হয়! চোর ডাকাত ছিলতাইকারি ধর্ষক ইত্যাদি অমানুষী কার্যকলাপে লিপ্ত হতে দেখা যায়! যে কারণে দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে, সবার জন্য সমান, সরকার কোন পক্ষের হয়ে মাথা ঘামাবে না। বড় বড় কান্ট্রি গুলোতে যেমন তেমন হতে হবে। সরকার দেখবে, টেকআপ দেবে, সবার জন্য একই রকম সার্ভিস, অভিভাবকের দায়িত্ব পালন। আইন-শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব থাকবে! দুর্নীতি বন্ধ করবে। পক্ষা পক্ষী করবে না এমন সরকার দরকার। তাহলে প্রত্যেকে সবাই সমান অধিকার নিয়ে মেধার বলে, যোগ্যতার বলে, অধিষ্ঠিত থেকে, দেশে অনেক ভালো থাকবে। নিজে ভালো থাকবে জনগণেরও ভালো রাখবে। তাহলে সবাই শান্তিতে থাকবে। নারী-পুরুষ,হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল জাতি দলমত নির্বিশেষে পূর্ণমাত্রায় শান্তিতে থাকবে। কারো পালাতে হবে না, জেলে যেতে হবে না, যাবত জীবন কারাদন্ডে কারাগারে কোন মানুষের মৃত্যু হবে না। কোন অন্যায় কাজ দুর্নীতির জন্য জীবদ্দশায় কারো পচে গলে দুর্গন্ধ হতে হবে না । কেননা অন্যায় কাজ দুর্নীতিই তো দেশে থাকবে না। অপমান অপদস্ত হয়রানি ইত্তাকার জ্বালা যন্ত্রণাও আর দেশে থাকবে না। সুস্থ সুন্দর শান্তিময় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবেই থাকবে। আসুন না আমরা বাংলাদেশের সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে গাই- সেই গানটি, যে গানটি প্রেমময় ভাষা সৈনিকরাও গাইতেন, এই দেশ এইমাটি এই জন্মভূমির প্রতি মহাউদগ্রীব ভালোবাসায় ‘এমন দেশ আর কোথাও খুঁজে পাবে না তো তুমি, সকল দেশের (সেরা/রানী) সেজে আমার জন্মভূমি! সে যে আমার জন্মভূমি! সে যে আমার জন্মভূমি….!’
১৬. ৮. ২০২৫ ইং, দুপুর ২টা, শনিবার।