
মাখদুম সামি কল্লোল: বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে হজ করার সুযোগ আবার চালু হতে যাচ্ছে, যা গত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। বর্তমানে, হজযাত্রীদের জন্য একমাত্র বিকল্প হচ্ছে বিমান ভ্রমণ, যা বেশ ব্যয়বহুল।
বাংলাদেশ সরকার এবং সৌদি আরবের মধ্যে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সৌদি সরকার নীতিগতভাবে সমুদ্রপথে হজ পালনের অনুমতি দিয়েছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো হজযাত্রার খরচ কমানো, যা অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের জন্য একটি বড় বাধা।
যেভাবে সমুদ্রপথে হজ যাত্রা সম্ভব, সাধারণত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। জেদ্দা বন্দর থেকে মক্কা ও মদিনার দূরত্ব তুলনামূলকভাবে কম।
খরচ এবং সময়, ধারণা করা হচ্ছে, সমুদ্রপথে হজের খরচ বিমানের চেয়ে প্রায় ৪০% কম হতে পারে। এতে জনপ্রতি প্রায় ৯০০ ডলার (প্রায় ১ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত খরচ কম হতে পারে। এটি অনেক দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য হজ পালনকে সহজ করে তুলবে।
চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দা বন্দরে পৌঁছাতে জাহাজে প্রায় ৭-৮ দিন সময় লাগতে পারে। যাওয়া-আসা মিলিয়ে মোট প্রায় ১৬ দিনের যাত্রা হবে। এর সাথে হজের আনুমানিক ৩০-৩২ দিনের প্যাকেজ যোগ করলে পুরো হজ প্যাকেজটি সম্পন্ন করতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে।
জাহাজ ও অন্যান্য সুবিধা, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এই রুটে দুটি জাহাজ চালু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জাহাজ দুটি একসঙ্গে প্রায় ১৫০০ যাত্রী আনা নেয়া করতে পারবে।
জাহাজে অডিটোরিয়াম থাকবে যেখানে নামাজ আদায় করা ছাড়াও হজের নিয়মকানুন প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া, যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য জাহাজে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা থাকবে।
এই উদ্যোগ সফল করার জন্য বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি, হজযাত্রীদের জন্য জাহাজে পর্যাপ্ত থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, চিকিৎসা সুবিধা এবং অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় স্থাপন করা।
যাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা।
সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী হজ মৌসুমেই সমুদ্রপথে জাহাজ চালু করা হবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব সলিমুল্লাহ এটি চালু হলে বাংলাদেশের বহু মুসলমানের জন্য হজ পালনের স্বপ্ন পূরণের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।