বাংলাদেশ

মীরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের বৈধ নিয়োগের বিষয়ে আদালতের একাধিক রায়কে উপেক্ষা করে ডিআইএ কতৃক তদন্ত প্রতিবেদন

টাইমস ২৪ ডটনেট :গত ৩০ জুলাই, ২০২৫ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) মীরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকদের বিষয়ে এক তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তাগণ অধ্যক্ষের বিষয়ে মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, নিয়োগকালীন অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ গভর্নিং বডিতে অন্তর্র্ভূক্ত সদস্য সচিব তথা তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ অবৈধ নির্দেশনা থাকায় উক্ত গভর্নিং বডি কর্তৃক নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি মর্মে অভিযোগ প্রমাণিত।
এ বিষয়ে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের রিপোর্টের সুপারিশের প্রেক্ষিতে গত ১৩/০৫/২০১৮ তারিখে পত্র নং ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯.০১৭.১৭.১২৪ এর মাধ্যমে সহকারি প্রধান শিক্ষক এবিএম আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কে পত্র ইস্যু করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবিএম আব্দুস সালাম উক্ত পত্রের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন নং ৬২৩৩/২০১৮ দায়ের করেন। ১৬/০৫/২০১৮ ইং তারিখে মহামান্য আদালত উক্ত রিটের প্রেক্ষিতে উক্ত পত্রের কার্যকারিতা চার সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেন । উক্ত রায়ের কপি সহ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এবিএম আব্দুস সালাম মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে ২৫/০৬/২০১৮ ইং তারিখে পত্র নং ৩৭.০০.০০০০ .০০০.৩৯.০১৭.১৭.১৬৮ এর মাধ্যমে ১৩/০৫/২০১৮ তারিখ পত্র নং ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯.০১৭.১৭.১২৪ এবং ১০/০৬/২০১৮ ইং তারিখের পত্র নং- ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯.০১৭ .১৭.১৫৫ দুটি পত্রের কার্যকারিতা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। স্থগিত থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষের নিয়োগকালীন সময়ের গভর্নিং বডি গঠন এবং অধ্যক্ষের নিয়োগ সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে সরকার পক্ষ ভারপ্রাপ্ত এ.বি.এম আব্দুস সালামের রিট পিটিশন নং ৬২৩৩/২০১৮ এর বিরুদ্ধে এপিলেট ডিভিশনে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং ২৭০৩/২০১৮ দায়ের করলে মহামান্য বিচারপতি ২২/০৭/২০১৮ইং তারিখে ফুল বেঞ্চে শুনানির জন্য অগ্রায়ণ করেন। ২২/০৭/২০১৮ ইং তারিখে মহামান্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চারজন বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে রিট পিটিশন নং ৬২৩৩/২০১৮ এর মেরিট না থাকায় সরকার পক্ষের আপিলকে ডিসমিস করে দেন । ফলশ্রুতিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এ.বি.এম আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয় এবং তিনি বৈধ সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এ বিষয়ে অধ্যক্ষের বক্তব্য হলো, ডিআইএ তদন্ত রিপোর্টের কোথাও আমাকে অবৈধ বলে নি। আমার নিয়োগ যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব এ.বি.এম. আব্দুছ ছালাম সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালনকালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর অনুমোদিত গভর্নিং বডির গত ১৪-০২-২০১৯ তারিখের সভায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভাপতি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন এবং আমি সভাপতি বরাবর প্রধান শিক্ষক শূন্য পদে আবেদন করি। নিয়োগ বোর্র্ডে সভাপতি, ডিজির মহোদয়ের প্রতিনিধি, পল্লবী থানার থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, নিয়োগ বোর্ডের একজন সদস্য হিসাবে একটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। আমি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১ম স্থান অধিকার করে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হই। সভাপতি মহোদয় আমাকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। নিয়োগপত্রের প্রেক্ষিতে আমি ১৮-০৩-২০১৯ তারিখে মীরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করি। সভাপতি মহোদয় আমার যোগদানপত্র গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে গভর্নিং বডির সভায় আমার যোগদান অনুমোদন করা হয়। এই ক্ষেত্রে এ.বি.এম. আব্দুছ ছালাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান শিক্ষক নিয়োগে সহকারী প্রধান শিক্ষক (এ.বি.এম. আব্দুছ ছালাম) প্রধান শিক্ষকের কর্তৃপক্ষ হতে পারে না। যেহেতু আমার নিয়োগ ও যোগদান গভর্নিং বডির সভাপতির মাধ্যমে সু-সম্পন্ন হয়েছে সেহেতু আমার নিয়োগ এ.বি.এম. আব্দুছ ছালাম (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) সাহেবের কোন কার্যকলাপ বা বৈধতা বা অবৈধতার বিষয়ের সাথে কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়। সেই ক্ষেত্রে আমার নিয়োগ সম্পূর্ণ বৈধ এবং আইনসিদ্ধ। এখানে মন্ত্রণালয়ের ১৩/০৫/২০১৮ তারিখে পত্র নং ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯. ০১৭.১৭.১২৪ এবং ১০/০৬/২০১৮ ইং তারিখের পত্র নং- ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯.০১৭.১৭.১৫৫ এর ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে উক্ত দুটি চিঠির কার্যকারিতা ২৫/০৬/২০১৮ ইং তারিখে পত্র নং ৩৭.০০.০০০০.০০০.৩৯.০১৭.১৭.১৬৮ এর মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থগিত হয় এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের এপিলেট ডিভিশনের রায়ের কপি সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তাগণ অবগত নন। কারণ তদন্ত কর্মকর্তাগণ কর্তৃক আমার নিয়োগের সকল কাগজপত্র চাওয়া হলেও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.বি.এম. আব্দুছ ছালামের কোন কাগজপত্র চাওয়া হয় নি। এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীগণ কোর্টের রায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থগিতকৃত চিঠি তদন্ত কর্মকর্তাদের নিকট গোপন করেছেন।
এ দিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নিতির কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।

Related Articles

Back to top button