
টাইমস ২৪ ডটনেট: অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বিখ্যাত হারবার ব্রিজে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছে হাজারো মানুষ। রবিবার (৪ জুলাই) প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মিছিলে যোগ দিয়েছেন এই বিক্ষোভকারী। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় শান্তি ও ত্রাণ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কারণ গাজার মানবিক সংকট ক্রমাগতভাবে আরও খারাপ হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু মানুষ ক্ষুধার প্রতীক হিসেবে হাড়ি-পাতিল বহন করছিল। বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজকেরা একে ‘মানবতার মিছিল’ নামে অভিহিত করেছে।মিছিলে অংশ নেওয়া ৬০ বছর বয়সী ধবধবে সাদা চুলের এক ব্যক্তি বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। যখন সারা বিশ্বের মানুষ একত্রিত হয়ে আওয়াজ তোলে,তখন মন্দ শক্তিকে পরাজিত করা যায়।’মিছিলে বয়স্ক থেকে শুরু করে ছোট শিশুদেরসহ পরিবারের নানা বয়সী মানুষ অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ছিলেন উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।অনেকেই ছাতা নিয়ে এসেছিলেন। কেউ কেউ ফিলিস্তিনি পতাকা উড়াচ্ছিলেন এবং স্লোগান দিচ্ছিলেন “আমরা সবাই ফিলিস্তিনি”।নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ ও রাজ্যের প্রধান গত সপ্তাহে ব্রিজের ওপর মিছিল নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। এই ব্রিজ শহরের অন্যতম প্রতীক এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ রুট। তিনি বলেছিলেন, এই রুটে মিছিল জননিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং পরিবহণ ব্যাহত করতে পারে। কিন্তু রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট শনিবার রায় দেয় যে, মিছিলটি চলতে পারবে।পুলিশ জানিয়েছে,তারা শত শত সদস্য মোতায়েন করেছে এবং মিছিলকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানিয়েছে।মেলবোর্নেও একই ধরনের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্রান্স এবং কানাডা ঘোষণা দিয়েছে যে তারা একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। ব্রিটেন বলেছে, যদি ইসরায়েল মানবিক সংকটের সমাধান না করে এবং যুদ্ধবিরতিতে না পৌঁছায়, তাহলে তারাও স্বীকৃতি দেবে।
ইসরায়েল অবশ্য পশ্চিমা এই দেশগুলোর সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাস ইসরায়েলের ওপর হামলা চালানোর পর, ইসরায়েল পালটা আক্রমণ শুরু করে। এই হামলা গাজার অধিকাংশ অঞ্চল ধ্বংস করে দেয়। প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজায় অন্তত ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ত্রাণ সংকটে সেখানে ব্যাপক অনাহার ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার মধ্য-বামপন্থি প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন,তিনি একটি দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান সমর্থন করেন। এবং ইসরায়েলের ত্রাণ নিয়ে অব্যবস্থাপনা ও বেসামরিক নাগরিক হত্যাকে ‘ন্যায়সঙ্গত নয় বলে সমালোচনা করেছেন তিনি। তবে তিনি এখনও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেননি।