বাংলাদেশ

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : সুযোগে অসৎ ব্যবহার

মনির হোসেন জীবন, টাইমস ২৪ ডটনেট : রাজধানীর উত্তরা- তুরাগের ডিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা (মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি)কে পুজি করে পরিবহন সেক্টর এবং ব্যবসায়ীরা মিলে পরিবহন ভাড়া ও খাবার পানির দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, এই সুযোগে অটোরিকশা, সিএনজি অ্যাম্বুলেন্স, পিকাপভান, ভ্যান গাড়ি চালক সু কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন অতিরিক্ত বাড়তি বেশি টাকা। তাদের সাথে স্হানীয় বেশ কিছু মুদি দোকানদার খাবার পানি (মিনারেল ওয়াটার বোতল) সহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি করে বিপদগামী হাজার হাজার নিরীহ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বাড়তি টাকা। এসময় ভুক্তভোগী ও অসহায় মানুষদের বলতে শোনা গেল “হায়রে বিবেকহীন মানুষ! বিপদের সময় অসৎ ব্যবহার করে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লাখ টাকা।

ভুক্তভোগী ও সর্বসাধারণের মানুষের অভিযোগ, বিমান দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে দেশের দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষ গুলো বলছে, যেখানে মাত্র ৫০/৬০ টাকা রিকশা ভাড়া ছিল তার বদলে তাকে (যাত্রী)কে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। ২শ/৩শ টাকার সিএনজি ভাড়া ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা গুনতে হয়েছে । পরিবহন সেবার নামে ডিয়াবাড়ি এলাকায় আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভাড়া বহুগুণ দিতে হয়েছে। দেখা গেছে, এই খাতে এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি ছাড়া আর নতুন কিছু না । এসময় হাজারো উৎসুক জনতা (নারী পুরুষ), শিক্ষার্থী স্বজন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভীড় ছিল অনেকটাই চোখে পরার মতো। এছাড়া তুরাগের ডিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্হায়ী ক্যাম্পাস এবং তার আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠা বিভিন্ন দোকান গুলোতে ১/২ লিটার পানির দাম ৫০/১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে । বলতে গেলে খাবার পানির জন্য এক ধরনের হাহাকার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। পরিবহন চালকেরা ভয়ে ও আতংকে মরদেহ এবং অগ্নিদগ্ধ শিশু শিক্ষার্থীসহ আহত মানুষদেরকে তারা কেউ ধরতো না এবং কোন ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।

এদিকে, মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে অসৌজন্য ও অমানবিক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে । দুর্ঘটনার পরে নিদিষ্ট স্থানে অভিভাবকদের জন্য বসার কোন জায়গা, হেল্প সেন্টার ও পরামর্শ কেন্দ্র করেনি ? এসব না করে কোন কারণে মিডিয়ার সামনে আসেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ ! সংশ্লিষ্ট বলছে, সিসিটিভি ফুটেজ সহ রেজিস্ট্রার খাতায় নাম গুলো নেই, ছাত্রদের ক্লাশের দৈনিক হাজিরা খাতার খবর নেই, এছাড়া নেই হতাহতদের পরিসংখ্যানও। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত-আহত, নিখোঁজ, শিক্ষক – শিক্ষিকা ও অভিভাবক নিখোঁজের কোন সঠিক তথ্য। অথচ এসব কোন কিছু না দিয়ে আড়ালেই চুপচাপ কেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর এ সবের জন্যই হট্টগোল ও নানাবিধ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরা। বরং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অভিভাবকরা গিয়ে সেখানে পথে পথে নানা ধরনের অহেতুক হয়রানি এবং লাঞ্চনার শিকারও হয়েছেন কেউ কেউ। এলাকাবাসি, শিক্ষক ও আহত শিক্ষার্থীরা জানান, বিমান দুর্ঘটনার সময় বিকট শব্দ হয় এবং মুহুর্তের মধ্যে সেখানে আগুন ধরে যায়। যার কারণে স্হানীয় লোকজনের মনে ভয়ে এক ধরনের আতংন্ক সৃষ্টি হয়। এসময় মানুষ দিকবেদিক ছুটতে শুরু করে। বিমান দুর্ঘটনা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাত দিন নিরলস ভাবে কাজ করতে দেখা গেছে।

স্বজনহারা ভুক্তভোগী পরিবার, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত পূর্বক খতিয়ে দেখলেই স্কুল কর্তৃপক্ষের থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। কেন তাদের এত গাফিলতি । স্বজন হারা ব্যক্তিদের কান্না এখনও থামছে না। হতাহতদের দায়িত্ব ও এই ঘটনার দায়বার কে নিবে! বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান জনগনের মাঝে তুলে ধরার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকাবাসী ও স্বজনরা জোরদাবি জানান।

Related Articles

Back to top button