টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে একে বসবাস উপযোগী ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, পানি ও মশক সমস্যার সমাধান, প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ ও পরিবেশ দূষণ রোধ করে সবুজায়নের মাধ্যমে এলাকাটিকে পরিবেশবান্ধব করতে চান সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ চান এ ওয়ার্ডের সব প্রার্থীই। ওয়ার্ডটিতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রস্তুতির পাশাপাশি জয় নিশ্চিত করতে স্থানীয় রাজনীতির নানা সমীকরণ করছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা। স্থানীয় ভোটাররাও এসব সম্ভাব্যকে নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করছেন। ডিএসসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডটিকে আধুনিক মডেল ওয়ার্ড গড়তে চান সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ডিএসসিসির সাবেক ৬০ নম্বর বর্তমান ২৪ নম্বর ওয়ার্ডটি পুরান ঢাকার লালবাগ থানা এলাকায়। এটি ডিএসসিসির অঞ্চল-৩-এর আওতাধীন।
এ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৫২ হাজার হলেও ওয়ার্ডটিতে ২ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ওয়ার্ডটি ঘনবসতিপূর্ণ ও ছোটখাটো সরু গলিতে ঠাসা। এটি সংসদীয় ঢাকা-৭ আসনের অন্তর্ভুক্ত। মোগল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন লালবাগ কেল্লার পাশ ঘেঁষে শহীদ নগর, আমলীগোলা, জগন্নাথ সাহা রোড, বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা নিয়ে ১০ পাড়া-মহল্লা রয়েছে এ ওয়ার্ডে।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য মো. জিয়াউর রহমান কোয়েল। বিএনপি থেকে সফিউদ্দিন আহমেদ সেন্টু, মোশারফ হোসেন খোকন ওরফে কালা খোকন ও জাতীয় পার্টি থেকে সাকিব উদ্দিন শিফানের নাম শোনা যাচ্ছে।
ডিএসসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোকাদ্দেস হোসেন জাহিদ বলেন, বলেন, আমার প্রয়াত বাবা এ এলাকার কাউন্সিলর থাকাকালীন ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়েছিলেন। তিনি মারা যাওয়ায় এলাকাবাসী আমাকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন। গত ১৩ মাসে আমি দায়িত্ব পালনকালীন এলাকার অধিকাংশ রাস্তার সিসি ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। সুয়্যারেজ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং খেলার মাঠের আধুনিকায়ন কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এলাকার কয়েকটি স্থানে মাদক ব্যবসা ও কিশোর গ্যাং থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় থানা পুলিশের হাতে একাধিকবার তাদের ধরিয়ে দিলেও তারা ছাড়া পেয়ে একই কাজ করে। আমার দল আওয়ামী লীগ ও এ এলাকার ভোটাররা যদি আবারও কাউন্সিলর পদে আমার ওপর আস্থা রাখে, তাহলে এলাকার বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করে একটি বসবাস উপযোগী ওয়ার্ড গড়ে তুলব।
আরেক সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জিয়াউর রহমান কোয়েল বলেন, এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সবচেয়ে বড় সমস্যা। এছাড়া কমিউনিটি সেন্টার ও ব্যায়ামাগার নেই। এ কারণে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নানা ধরনের সমস্যায় হচ্ছে। আমি যদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হই, তাহলে ওয়ার্ডবাসীর জন্য সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করবো।
নিজে এখনো নানা ধরনের সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত জানিয়ে কোয়েল বলেন, আমি এখনো এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি। আমরা শুধু বিনা খরচে ডাক্তারই দেখাই না, সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঔষধও ফ্রিতেই দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, আমি রওনাক স্পোটিং ক্লাবের সভাপতি। এই ক্লাবের মাধ্যমেও আমরা এলাকায় নানা ধরনের সামাজিক কর্মক- পরিচালনা করে থাকি। ডেঙ্গু মৌসুমে এডিস মশা নিধনে আমরা নিয়তিক কাজ করেছি। সমাজে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করে আমাদের এই ক্লাব। তিনি আরও বলেন, আমি দায়িত্ব পেলে আমার প্রথম কাজ হবে এলাকাকে মাদকমুক্ত, গ্রিন ও ক্লিন করে গড়ে তোলা। বাসিন্দাদের জন্য খেলার মাঠ, শিশু পার্ক, ব্যায়ামাগার, পাঠাগার ও পথচারীদের জন্য পাবলিক টয়লেট নির্মাণ এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের নির্দেশ মেনে ওয়ার্ডটিকে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বসবাসযোগ্য হিসেবে গড়ার তোলারও প্রতিশ্রুতি দেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ণ প্রত্যাশী কোয়েল।