খন্দকার হানিফ রাজা, বিশেষ প্রতিনিধি, টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের ব্যবসায়ীক বিরোধে প্রশাসনের সহযোগিতায় ৭টি মিথ্যা মামলায় হয়রানি, বিনা দোষে ৫০দিন কারাভোগের বিচার ও দশ লাখ টাকা মূল্যের ঘড়ি, ২টি মোবাইল সেট আত্মসাতে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়েছেন এক ব্রিটিশ নাগরিক। ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে প্রশাসনের সহযোগিতায় মিথ্যা মামলায় হয়রানির প্রতিবাদে সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী জানান মোহাম্মদ আলী (মিঠু) নামের এক প্রবাসী ব্রিটিশ নাগরিক। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ১২০ জন মিলে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যবসায় স্থানীয় তিনজনকে পার্টনার করা হলে ওই তিন জন প্রতিষ্ঠানটি আত্মসাত করতে চক্রান্ত শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে রামপুরার বনশ্রীর আত্মীয়ের বাড়ী থেকে রামপুরা থানার এএসআই মো. আতোয়ার রহমান, এএসআই বিল্লাল, এএসআই হাফিজ, এএসআই আবুল হোসেন তাকে ওসি তাকে দেখা করার কথা বলে থানায় আটক করে। এএসআই আবুল হোসেন তার হাত থেকে দুইটি মোবাইল সেট কেড়ে নেয়। যার মূল্য ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। পরে ডিউটি অফিসার এসআই তওফিকা ইয়াছমিন তার ব্যবহৃত ১০লাখ টাকা মূল্যের একটি হাত ঘড়ি, লেদার বেল্টের স্বর্ণের ওমেগা’সহ তার হেফাজতে নিয়ে হাজতখানায় পাঠায়। ওই রাতে আইনজীবিসহ আত্মীয়রা থানায় গেলেও কাউকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। পর দিন ১০ জুলাই দুপুর ২ টার দিকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি তার ঘড়ি ও মোবাইল ফেরত চাইলে ডিউটি অফিসার সুলতানা আক্তার বলেন, জামিনে আসার পর এসব ফেরত পাবেন।
প্রবাসী ব্রিটিশ নাগরিক মোহাম্মদ আলী (মিঠু) আরো জানান, রাজশাহী আদালতের ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে হোটেল রিজেন্সির পরিচালক, মোসলে উদ্দিন আহমেদ, আরিফ মোতাহার, কবির রেজা, নাজমা আরিফ, রোকেয়া খাতুন, জেবুন্নেছা, ফাহিম আরিফ মোতাহার, ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের নির্বাহী পরিচালক শহীদ হামিদ, হোটেল স্টাফ শুভ ওরফে শান্তনু ধর, হোটেল স্টাফ নকিুবুল ইসলাম, নাভানা টাওয়ারের নাজমুল সিদ্দিকী সানি, হোটেল স্টাফ লাভলু, কোম্পানি সচিব মিজানুর রহমান, হোটেল বার ড্যান্সার ফারহানা ঐশি, ক্লাব অর্গানাইজার শাহীন, জয়নাল রাজা, আরিফ মোতাহারের চাচাতো ভাই আরমান, রিজেন্সি ক্লাব-১৩ নাইট ক্লাবের অর্গানাইজার নাঈমা মর্তুজাসহ সকলে মিলে একজন ভৌতিক বাদীর মাধ্যমে একটি ভুয়া মামলা দিয়ে তাকে ৫০ দিন কারাভোগ করায়। তিনি হয়রানীর আশঙ্কায় গত ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করেন। ৬ ফেব্রæয়ারি গুলশানের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মোস্তাক আহম্মেদ বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। তিনি ২০১৯ সালের ১৭ জুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেন এবং রিজেন্সি হোটেল নিয়ে দুদকের ০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০৫৩.১৮ নং স্মারকে মামলা হয়েছে। দুর্নীতির সমস্ত প্রদানপত্র দুদকে জমা আছে এবং তদন্ত চলছে। ৫০ দিন কারাভোগের পর ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান।
থানা হাজতে আটকে রেখে মূল্যবান দু’টি মোবাইলসেট ও হাতঘড়ি ফেরত না দিয়ে তার ব্যক্তিগত তথ্যাবালি কু-চক্রী মহলের কাছে দিতে পুলিশ সদস্যরা জড়িত। তার ধারণা রেজিন্সি হোটেল নিয়ে ব্যবসায়ীক দ্ব›দ্ব ও উচ্চ আদালতের কোম্পানির কোর্টে মামলা নং- ৮২/২০১৮, ১৪৯/১৮ ও২৩৫/১৪ বিচারাধীন থাকায় সাবে খিলগাঁও জোনের এসি জাহিদ (বর্তমানে মতিঝিল জোনে কর্মরত)। তৎকালীন ওসি কুদ্দুস ফকির, এসআই হানিফসহ অন্যান্যরা ব্যবসায়ীক সহযোগিদের সহযোগিতায় মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। ২০১৪ সালে এসআই হানিফ ও তৎকালীন খিলক্ষেত থানার ওসি নজরুল হোটেল রেজিন্সির প্রবাসী শেয়ার হোল্ডারদের হেনেস্তা করতে মিথ্য মামলায় ফাঁসিয়েছে। তাদের সহযোগিতায় রিজেন্সি হোটেলের প্রবাসী শেয়ার হোল্ডারদের বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাভোগ করিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের পরিচালকরা হোটেলের শেয়ারহোল্ডার ব্রিটিশ প্রবাসী মজিদ খানকে জেলে রেখে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা না দিয়ে তার শেয়ার লিখে নেয়। ন্যায় বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপের দাবী জানান তিনি।